অযোধ্যায় অখিলেশের রোড শোয়ে জনসমুদ্র, চাপে বিজেপি
হয়তো এবারও জিতবে। প্রভু রামচন্দ্রের নামে ভোট হচ্ছে বলে কথা। আমরা হিন্দু। তাই এই একটা জায়গায় আবেগ কাজ করছে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু সত্যি বলছি কোনও কাজ হয়নি। বছরের পর বছর অন্ধকারেই অযোধ্যাকে ফেলে রাখা হয়েছে। বললেন, ধর্মেন্দ্র সিং। গেরুয়া দলের সমর্থক হয়েও যিনি কিছুতেই ভোট দিতে চাইছেন না বিজেপির বিধায়ককে। কেন? কারণ ২০১৭ সালে জয়ী বিজেপি বিধায়ক বেদপ্রকাশ গুপ্তাকে পাওয়াই যায়নি আজ পর্যন্ত কোনও প্রয়োজনে। সরযু নদীর তীরে নয়াঘাট তৈরি হয়েছে। অনেকটা হরিদ্বার কিংবা নাসিকের রামঘাটের ধাঁচে। অর্থাৎ সরযুর মূল স্রোতকে কিছুটা নিয়ে এসে পৃথক একটি নদীর রূপ দেওয়া। প্রশস্ত প্রাঙ্গণে প্রতিদিন আসেন অযোধ্যাবাসী। সন্ধ্যারতি পর্যন্ত তাঁরা থাকেন ঘাটে ঘাটে। তারপর ঘরে ফেরার পালা। ধর্মেন্দ্র সিং বললেন, বাড়িতে কেউ দেখা করতে গেলে, ভিতর থেকে বিধায়ক মহাশয় বলে পাঠান যে তিনি ঘরে নেই। এত বড় একটা সঙ্কট গেল করোনায়। কোনওরকম সাহায্য পেলাম না কেউ।
ঠিক একই ক্ষোভ প্রেম বাহাদুর ত্রিপাঠির গলাতেও। নিজে পুরসভায় চাকরি করতেন। একটি দোকান ছিল অন্তত তিন পুরুষের ইতিহাসে। রামমন্দিরের জন্য সেই দোকান থেকে এবার পাত্তাড়ি গোটাতে হবে। কেন? কারণ রাস্তা প্রশস্ত করা হবে। আর মন্দিরের সম্প্রসারণ। প্রত্যেক দোকানে পড়েছে উচ্ছেদের নোটিস। উচ্ছেদ করা হলে তো সরকার ক্ষতিপূরণ দেবে। প্রেমবাহাদুর বললেন এখানে দেওয়া হচ্ছে না। কারণ এইসব দোকান আসলে চলে পুরুষানুক্রমে ভাড়ায়। আর সেটাও আবার মুখের কথার চুক্তি। অথচ আমরা এতকাল এইসব ঘরকে নিজেদের ঘরের মতোই মনে করেছি। বাড়িওয়ালাকে ঠকাইনি কখনও। ভাড়াটে দোকানিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নাকি নিয়ম নেই। তাহলে আমাদের কী হবে?
একদিকে রামমন্দির হচ্ছে। প্রচার করা হচ্ছে প্রচুর রোজগার হবে। আমাদের কিন্তু রুটিরুজি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কী আছে বলুন তো? প্রশ্ন করলেন লক্ষ্মীকান্ত চন্দ্রা। অযোধ্যায় যাঁরা বেড়াতে আসেন, একটু মধ্যবিত্ত কিংবা উচ্চবিত্ত হলেই ফৈজাবাদে থাকেন হোটেলে। অযোধ্যায় একটা ভালো হোটেল নেই। ভালো স্কুল নেই। নেই কলেজও। এই ক্ষোভ উস্কে দিয়েই শেষবেলার প্রচারে শুক্রবার ঝড় তুলতে এলেন বিজেপির প্রধান প্রতিপক্ষ অখিলেশ যাদব। অযোধ্যার নয়াঘাট থেকে ফৈজাবাদ। দীর্ঘ রুটে ভিড় এমন পর্যায়ে পৌঁছলো যে সংলগ্ন সব রাস্তা বন্ধ হয়ে গেল। সমাজবাদী পার্টির দাবি, এটা কিন্তু যোগী আদিত্যনাথের রোড শোয়ের মতো ভাড়া করা লোক এনে নয়। সবাই স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এসেছে। কোনও বাস, ট্রাক দেখছেন? সকলেই স্থানীয় মানুষ। অযোধ্যায় এতদিনের চর্চায় ছিল রামমন্দির। হঠাৎ ভোটের ৪৮ ঘন্টা আগে চর্চা হচ্ছে ভিড় নিয়ে। বিজেপি হঠাৎ টেনশনে!