আনিস কাণ্ডে সিটের তদন্তে পাশে পরিবার
অবশেষে তদন্তে সহযোগিতা করতে এগিয়ে এল ছাত্রনেতা আনিস খানের পরিবার। দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তে রাজি হয়েছে তারা। শনিবার ভোরে আনিসের দেহ তোলা হবে। হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) কাজেও আর বাধা দেওয়া হচ্ছে না। শুক্রবার উলুবেড়িয়া উপ-সংশোধনাগারে গিয়ে ধৃতদের শনাক্ত করার আইনি প্রক্রিয়া ‘টিআই প্যারেড’-এ অংশ নেন আনিসের বাবা সালেম খান। তিনি আমতা কাণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যক্ষদর্শী। যদিও এদিন ধৃত হোমগার্ড কাশীনাথ বেরা এবং সিভিক ভলান্টিয়ার প্রীতম ভট্টাচার্যকে শনাক্ত করতে পারেননি। দাবি সালেম সাহেবের। আবার একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এদিনই আনিসের মোবাইল ফোন সিটের হাতে তুলে দিয়েছে তাঁর পরিবার। বাড়ির কাছে সমাধিস্থ করা হয়েছে ছাত্রনেতাকে। তাঁর বাবার দাবি মেনে সেখানে পাহারা এবং সিসি ক্যামেরার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
অন্যদিকে, সিট-এর তদন্ত যত এগচ্ছে, পুরভোটের প্রাক্কালে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে ততই তৎপরতা বাড়াচ্ছে বিরোধীরা। সবচেয়ে এগিয়ে সিপিএম। লাল পার্টির ছাত্র সংগঠন এসএফআই এদিন আমতা থানা ঘেরাও করে। পুলিসকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল এবং জলের বোতল ছোড়ে তারা। ঘটনায় আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিসকর্মী। রাসবিহারী মোড়ে পুলিসের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও করে তারা। এদিন বিকেলে আমতায় আনিসের বাবার সঙ্গে দেখা করতে যান বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, আরএসপির মনোজ ভট্টাচার্য এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের হাফিজ আলম সাইরানি। সেই সময় সালেম সাহেব ছিলেন উলুবেড়িয়া উপ-সংশোধনাগারে। তাঁর সঙ্গে দেখা করতে প্রায় দু’ঘণ্টা অপেক্ষা করেন বাম নেতারা। তবে এদিন প্রথমে টিআই প্যারেডে যেতে রাজি হননি আনিসের বাবা। শেষমেশ বিকেল চারটে নাগাদ ভাই জালেম খান এবং আইনজীবী ইমতিয়াজ আহমেদের সঙ্গে তিনি উপ-সংশোধনাগারে যান। বাড়ি ফেরার পথে সালেম খান বলেন, ‘যে পুলিসকর্মী আমার দিকে তাক করে বন্দুক ধরে রেখেছিল, সে এই দু’জনের মধ্যে কেউ নয়।’ তদন্তের স্বার্থে আনিসের ডবল সিমের মোবাইল ফোনটি নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন সিট আধিকারিকরা। কিন্তু আইনি নোটিস নিয়ে গিয়েও সেটি করায়ত্ত করতে পারেননি তাঁরা। অবশেষে এদিন তা সিটের কাছে হস্তান্তর করেন সালেম খান। ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য সেটি হায়দরাবাদের ল্যাবে পাঠানো হবে।