ডাক্তার হয়ে ওঠা হবে তো শেষ পর্যন্ত, এখন এই প্রশ্নই বুক কাঁপিয়ে দিচ্ছে ইউক্রেন নিবাসী ঝাড়গ্রামের পড়ুয়া
বুধবার রাত ৩টে। হঠাৎ প্রবল শব্দে কেঁপে উঠল চারপাশ। প্রথমে সবাই ভেবেছিল ভূমিকম্প বোধহয়! এক বন্ধুর ফোনে ঘুমের রেশ কাটতেই সম্বিত ফিরল খারাকিভের ডাক্তারি পড়ুয়া কিংশুক দত্তের। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, আশপাশে কোথাও ক্ষেপণাস্ত্র হানা হয়েছে। নিজের সেই রোমহর্ষক অভিজ্ঞতার কথা জানালেন বাঙালি ছাত্র।
জায়গাটা কিংশুকদের এলাকা থেকে অনেকটা দূরে, এই ভেবে কিছুটা স্বস্তিতে ছিলেন তারা। কিন্তু সেই স্বস্তিটুকুও উধাও হয়ে গেল শুক্রবার সকালে। খারকিভের কেন্দ্রস্থল নকোভায় ক্ষেপণাস্ত্র হানা হল এ বার। ধ্বংস হয়ে গেছে অনেক কিছুই। আর না ফাটা ক্ষেপণাস্ত্রগুলি রাস্তাতেই গেঁথে রয়েছে।
মোবাইল হাতে নিতেই এখন কেমন ভয় করছে কিংশুকদের। সংবাদমাধ্যমে, সমাজমাধ্যমে শুধুই যুদ্ধের আর ধ্বংসের খবর, ছবি। আঁতকে উঠছেন তারা। বিদেশে ডাক্তারি পড়তে এসে এমন দুর্বিপাকে পড়তে হবে দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি।
কিংশুক ইউক্রেনে এসেছেন ২০১৮ সালে। ভিএন কারাজ়িনা খারকিভ ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে চিকিৎসা বিজ্ঞানের স্নাতকস্তরে চতুর্থ বর্ষের ছাত্র তিনি। খারকিভ শহরে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে একটি বহুতলের একতলায় আরও দুই বাঙালি সহপাঠীর সঙ্গে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকেন। বাকি দুজন উত্তরবঙ্গের বাসিন্দা। আর কিংশুক ঝাড়গ্রামের ছেলে। বাবা চিল্কিগড় গ্রামীণ হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী। মা শিক্ষিকা।
বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান তিনি। চিন্তায় আছেন কিংশুকের বাবা মা। যুদ্ধ বেধে যাওয়ায় সবাই ভয়ে সিটিয়ে রয়েছে। পুরোদস্তুর ডাক্তার হতে এখনও বছর তিনেক লাগবে। কিন্তু পড়াশোনাটা কি আদৌ শেষ করতে পারবে কিংশুকরা? একদল এই এক প্রশ্নের বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের একদল পড়ুয়া। যারা একদিন একবুক স্বপ্ন নিয়ে ইউক্রেনের পথে পাড়ি দিয়েছিল।