ডায়েটিং-এর খুঁটিনাটি
অনেকেই খুব অল্প সময়ে ওজন কমানোর জন্যে উঠে পড়ে লেগে পড়ে। ‘ডায়েট’ শব্দটি এ বিষয়ে খুব ইন। মনে করা হয় ডায়েট মানেই কম খাওয়া। আর তাতেই কেল্লা ফতে। ওজন কমবেই। এটা একটা ভীষণ ভুল ধারণা। ডায়েট মানে কম খাওয়া নয়, বরং সঠিক খাওয়া। অনেকেই এই কম খেতে গিয়ে নিজের শরীরে বিভিন্ন নতুন অসুখ বাঁধিয়ে বসেন।
ডায়েট মানে কি শুধুই ওজন কমানো?
শারীরিক ওজনটাই শেষ কথা নয়। অনেককেই দেখতে রোগা লাগলেও তাদের ওজন বেশি হতে পারে। শরীরে হাড়ের ওজন, পেশির ওজন বেশি হতে পারে। কোনও অসুস্থতা না থাকলে, ওজন নিয়ে চিন্তা করার কোন কারণ নেই।
তাই ওজন না কমিয়ে ইঞ্চ লসের মাধ্যমে নিজেকে মেনটেন করুন। হুট করে অনেক ওজন কমানোর পদ্ধতি স্বাস্থ্যসম্মত নয়।
বিএমআর এবং বিএমআই
বিএমআর হল বেসাল মেটাবলিক রেট। শরীর যখন বিশ্রামে থাকে, তখন শরীরের নানা কাজ চালানোর জন্য যত ক্যালরি লাগে। বিএমআর হল বডি মাস ইনডেক্স। অর্থাৎ উচ্চতা অনুযায়ী যে ওজন আদর্শ। তবে এক এক জনের ক্যালরি বার্ন হওয়ার পরিমাণ আলাদা। লিঙ্গ ও শারীরিক সুস্থতার উপরেও তা নির্ভর করে।
ওজন মাপার নিয়মকানুন
বিভিন্ন ওজনের মেশিন বিভিন্ন মাপ দেখাতে পারে। তাই নিয়মিত ওজন মাপার প্রয়োজন হলে যে কোনও একটি মেশিনেই মাপা উচিত।
ওজন কমা নির্ভর করে নানা বিষয়ের উপরে, শরীরের গঠন, ফ্যাটের অ্যাকিউমুলেশন, মেটাবলিক রেট, স্ট্রেস লেভেল, রোগের ইতিহাস ইত্যাদি। তাই সকলের যে একই হারে ওজন কমবে, তা ঠিক নয়।
ওজন মাপার আদর্শ সময় সকালবেলা। সারাদিনে ওজনের হেরফের হয়। আবার পিরিয়ডস চলাকালীনও ওজন বাড়ে-কমে।
সুস্থ থাকার জন্য
অনেকেরই ধারণা, ওজন কমাতে গেলে সবচেয়ে আগে ভাত, আলু সব বাদ দিয়ে দিতে হবে। কার ডায়েটে কী কমালে উপকার হবে, সেটা নির্ধারণ করতে পারেন ডায়াটিশিয়ানই। হতেই পারে, কোনও কিছুই একেবারে বাদ না দিয়ে পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হল। সুস্থ থাকার জন্য বাড়ির খাবারই যথেষ্ট।
নিজের ইচ্ছে মতো ডায়েট করলে, তা থেকে নানা সমস্যা হতে পারে। ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া, চুল পড়ে যাওয়ার মতো সমস্যার পাশাপাশি ডিহাইড্রেশন, অ্যাসিডিটি, ব্লোটিং, কোষ্ঠকাঠিন্য, অনিয়মিত পিরিয়ডস অস্বাভাবিক নয়।
আবার অনেক ক্ষেত্রে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টসের অভাব ঘটে। দীর্ঘমেয়াদি ভুল ডায়েট মেনে চলার ফলে অঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়াও অস্বাভাবিক নয়।