করোনার কোপে সিরিয়াল – বদল চরিত্র, চিত্রনাট্য
অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রী টালিগঞ্জে শুটিং ফ্লোরে ফিরতে নারাজ। ফলে চরিত্রে মুখ বদল। কিংবা পরিবর্তন চিত্রনাট্যে।
রণে বনে জলে জঙ্গলে যিনি সকলের সহায়, সেই লোকনাথের মা বদলে গেল। করোনার চোটে এমন কেলেঙ্কারি। ‘জয় বাবা লোকনাথ’ ধারাবাহিকের অভিনেত্রী সৌমিলী বিশ্বাস বলে দিয়েছেন, শুটিং ফ্লোরে আসতে স্বচ্ছন্দ নন। যদিও সৌমিলীর বয়স ৬০ ছুঁতে অনেক দেরি। তাঁর জায়গায় অভিনয় করবেন শ্রাবন্তী মালাকার।
অতিমারীতে মা বদল ‘কোড়া পাখি’ ধারাবাহিকেও। ঋষি কৌশিকের মা’র চরিত্রে অভিনয় করছিলেন অনুসূয়া মজুমদার। তাঁর গলায় তীব্র চিন্তা, ‘শুটিং করতে ভালোবাসি। কাজে ফিরব। তবে এখন আমাদের বয়সের মানুষদের ঝুঁকি বেশি। তাই শুটিং ফ্লোরে যেতে চাই না।’ অনুসূয়ার জায়গায় আসছেন মৌমিতা গুপ্ত। তবে বাবার চরিত্রে সুমন্ত মুখোপাধ্যায় অভিনয় ছাড়ছেন না। ‘কে আপন কে পর’-এ ফের উল্টো ছবি। ‘জবার শাশুড়ি’ বিশিষ্ট অভিনেত্রী কল্যাণী মণ্ডলের বয়স ৬৮। তিনি এলেন। অথচ শ্বশুর চণ্ডীদাস কুমার অনুপস্থিত।
‘শ্রীময়ী’ ইন্দ্রাণী হালদারের সঙ্গে তাঁর অনস্ক্রিন শাশুড়ি চিত্রা সেনের খটাখটি লেগে থাকত সারাক্ষণ। কিন্তু মাসখানেক কাজ করবেন না চিত্রা। চিত্রনাট্যকার লীনা গঙ্গোপাধ্যায় স্পষ্ট করলেন, ‘মাসখানেক চরিত্রটিকে সরিয়ে রাখছি। আবার নিয়ে আসা হবে। তবে ‘কোড়া পাখি’-তে মা’র চরিত্রটিকে সরিয়ে রাখা সম্ভব হতো না’।
‘আলো ছায়া’ ধারাবাহিকের ঠাকুমা পরিচিত অভিনেত্রী অনামিকা সাহা ঘর ছেড়ে বেরোতে নারাজ। ‘জয় বাবা লোকনাথ’ ধারাবাহিকের বয়স্ক অভিনেতা গৌরী শঙ্কর পণ্ডা আবার প্রথম দিন ফ্লোরে এসে আত্মবিশ্বাস না পেয়ে বাড়ির পথে হাঁটা দিলেন। সৌমিলী বিশ্বাস, দেবযানী চট্টোপাধ্যায়ের মতো কমবয়সীরা যেখা%ে কিছু বয়স্কা অভিনেত্রীর উৎসাহ দেখার মতো। যেমন দেবিকা মিত্র, রমা গুহ। এক সময় ক্যানসারে কাবু হয়েছিলেন অভিনেত্রী বাসন্তী চট্টোপাধ্যায়। তবু ‘দুর্গা দুর্গেশ্বরী’ ধারাবাহিকে শুটিং করার জন্য তিনি প্রস্তুত।
অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রী সমস্যায় পড়েছেন বাড়িতে বয়স্ক মানুষ থাকার কারণে। ঈপ্সিতা মুখোপাধ্যায়কে ‘আলো ছায়া’ ধারাবাহিকে আলোর জা রূপে দেখা যেত। তিনি শুটিং বন্ধ রেখেছেন দিদাকে সুস্থ রাখতে।
মা-বাবা-শাশুড়ি-শ্বশুর নিয়ে যৌথ পরিবার টিকিয়ে রাখা চাট্টিখানি কথা নয়, টলিপাড়াকে সে শিক্ষা দিচ্ছে করোনা!