সুভাষ ও আধ্যাত্মিকতা

স্কটিশ চার্চ কলেজে ভর্তি হওয়ার সময় তাঁর বিষয় হিসাবে দর্শন বেছে নিয়েছিলেন সুভাষ চন্দ্র বসু। মহাবিশ্ব এবং তার অন্তর্নিহিত অর্থের প্রতি টান ছিল সুভাষের।

January 23, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

স্কটিশ চার্চ কলেজে ভর্তি হওয়ার সময় তাঁর বিষয় হিসাবে দর্শন বেছে নিয়েছিলেন সুভাষ চন্দ্র বসু। মহাবিশ্ব এবং তার অন্তর্নিহিত অর্থের প্রতি টান ছিল সুভাষের। দর্শনশাস্ত্র অধ্যয়ন করার সময়, পশ্চিমা দর্শনের সংশয়বাদ এবং যুক্তিবাদ তাঁর ওপর ছাপ রেখে গিয়েছিল। এই নতুন দর্শনের আলোকে তিনি প্রাচীন হিন্দু দর্শনের যৌক্তিকতার ব্যাখ্যা করতে চেয়েছিলেন।

সুভাষ চন্দ্র বসু

আধ্যাত্মিকতার সাথে পরিচয়

সুভাষচন্দ্র মায়াবাদের কার্যকারিতা সম্বন্ধে সন্দিহান ছিলেন বহু দিন। তিনি এই চিন্তাধারার সাথে নিজেকে মেলাতে পারেননি, আবার একেবারে অগ্রাহ্যও করতে পারেননি কখনও। মাত্র ১৫ বছর বয়সে স্বামী বিবেকানন্দর প্রদর্শিত ধারায় উদ্বুদ্ধ হন তিনি। এক নতুন ছাঁচে নিজের ভাগ্যের রূপান্তরিত হওয়ার সূচনা করেন সুভাষ।

বিভিন্ন ধরণের ধর্মীয় চিন্তার সংশ্লেষণের সন্ধানকারী সুভাষকে অন্তর্দ্বন্দ্বর সময় প্রেরণা জুগিয়েছিল স্বামীজির রচনাগুলি। একই সাথে আধ্যাত্মিকতার উন্মেষ, মানবতার সেবা এবং স্বাধীনতার প্রতি তার আবেগকে শক্তিশালী করেছিল স্বামীজির লেখা। এছাড়াও তাঁর মা, প্রভাবতী দেবী তাঁকে শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসর বাণী পড়ে শোনাতেন। এই থেকেই আধ্যাত্মিক সুভাষের সূচনা।

একজন ভারতীয় তীর্থযাত্রী

১৯৩৯ সালে অস্ট্রিয়ায় তিনি নিজের আত্মজীবনী ‘অ্যান ইন্ডিয়ান পিলগ্রিম’ বইটিতে লিখেছিলেন, “বিবেকানন্দ চূড়ান্ত চরিত্র বিকাশে জ্ঞান, নিষ্ঠা এবং নিঃস্বার্থ পদক্ষেপের প্রয়োজনের বিষয়ে নিঃসন্দেহে বলে গেছেন। তবে অরবিন্দের সংশ্লেষণের ধারণাটি অনন্য এবং তাৎপর্যপূর্ণ। অরবিন্দের রচনাগুলি অবশ্যই অনুপ্রেরণামূলক।”

নির্জনে সুভাষচন্দ্র আরও গভীরভাবে এই বিষয়ে ভাবতেন। তবে রাজনীতির ঘূর্ণিঝরে ধরা পড়ে গিয়ে তিনি আধ্যাত্মবাদ থেকে কর্মজীবনে নিমজ্জিত হয়ে পড়েন। যদিও, মাঝে মাঝে তিনি একাকী সময় কাটাতেন এবং নিরব মননশীলতায় মনোনিবেশ করতেন। কিন্তু সক্রিয় কর্মজীবনে বিচ্যুতি না ঘটিয়েই।

সর্বোচ্চ ত্যাগ

দেখে মনে হয় তিনি আধ্যাত্মবাদকে কেবল সক্রিয় জীবনের সংযোজন হিসাবে বিবেচনা করেছিলেন কিন্তু নিজের শেষ হিসাবে নয়। আপাতভাবে হয়ত এটি স্বাভাবিক মনে হতে পারে। কারণ তিনি ভাগ্যের লিখন খন্ডন করতে পারেননি – ভারতের স্বাধীনতার বেদিতে সব কিছু ত্যাগ করতেও পিছপা হননি সুভাষ।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen