ক্রীড়া জগতে রাজত্ব করা ভারতীয় নারীরা
কথায় বলে যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে। কেবল রান্নায় বা সাজগোজে নয়, খেলার মাঠও শাসন করছেন ভারতীয় মহিলারা। খেলার মাঠের সেই অনন্যদের খুঁজলো দৃষ্টিভঙ্গি :
১) মীরাবাঈ চানু :
২০২০ সালের টোকিও অলিম্পিকে ভরত্তোলনে ৪৯ কেজি বিভাগে ভারতের হয়ে রৌপ্য পদক জেতেন মীরাবাঈ চানু। এটি এ পর্যন্ত ভরত্তোলনে ভারতের ভারতের দ্বিতীয় পদক।
২) লাভলিনা বোরগোহিন :
লাভলিনা বোরগোহিন টোকিও অলিম্পিকে মহিলাদের বক্সিং বিভাগে ভারতের জন্য ব্রোঞ্জ পদক জেতেন। কোয়েটার ফাইনালে প্রতিপক্ষের চাইনিজ তাইপের নিয়েন চিন চেনকে হারিয়ে সেমিফাইনালের যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন লাভলিনা।
৩) পিভি সিন্ধু :
প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে দুটি অলিম্পিকে পদক জয়ের কৃতিত্ব রয়েছে পিভি সিন্ধুর দখলে। ভারতকে রিও থেকে রুপো এবং টোকিও থেকে ব্রোঞ্জ এনে দিয়েছেন সিন্ধু। কমনওয়েলথ, এশিয়ান গেমস এবং বিশ্ব ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপে বারবার দেশের হয়ে পদক জিতেছে সিন্ধু।
৪) ভারতের জাতীয় মহিলা হকি দল :
হকি স্টিক হাতে বিস্ময় সৃষ্টি করেছেন ভারতের মহিলারা। সকলকে চমকে দিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছে ব্রোঞ্জ জয় করেছেন তারা।
৫) ভবানীবেন প্যাটেল :
প্যারা অলিম্পিকে দেশের হয়ে টেবিল টেনিসে রুপো জয় করেছেন ভবানী। ভবানীর এই জয় ছিল ঐতিহাসিক। জীবনে প্রথম প্যারা অলিম্পিকেই পদক জিতে নজির গড়েন ভবানী।
৬) অবনী লেখারা :
টোকিও প্যারা অলিম্পিকে ভারতকে স্বর্ণ পদক এনে দিয়েছেন অবনী। ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে শুটিংয়ে সোনা জিতেছেন তিনি। সেই সঙ্গেই ৫০ মিটার রাইফেল শুটিং জিতে নিয়েছেন ব্রোঞ্জ পদক।
৭) সাইনা নেওয়াল :
অলিম্পিকে ব্যাডমিন্টনে ভারতের প্রথম পদক এসেছিল সাইনার হাত ধরে, তরুণ তরুণীদের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
৮) মেরি কম :
অনুপ্রেরণার আরেক নাম মেরি কম। সমাজের কাছে তিনি অনন্য নজির, লড়াই করে প্রতিকূলতাকে জয় করে তিনি হয়ে উঠেছেন দেশের অগ্নিকন্যা। ভারতের এই বক্সারের জীবন সংগ্রামের কাহিনী উঠে এসেছে রুপোলি পর্দাতেও। এখনও তিনি লেখে চলেছেন।
৯) ফোগত ভগিনীরা :
ভারতে কুস্তি আর ফোগত পরিবার আজ প্রায় সমার্থক। গীতা ববিতাদের কথা উঠে এসেছে চলচ্চিত্রেও। ভীনেশ ফোগত বিশ্বে মহিলা কুস্তিগীরদের তালিকা দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছিলেন। যা তাঁর খেলোয়াড় জীবনের সর্বকালের সেরা কীর্তি। ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন শিপে জিতেছেন সোনা, কমনওয়েলথ, এশিয়াডেও দেশকে গর্বিত করেছেন। অর্জুন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
১০) হিমা দাস :
দুরন্ত গতির অপর নাম হিমা। ২০১৯ সালে ২০ দিনেরও কম সময়ের ব্যবধানে পাঁচ পাঁচটি স্বর্ণ পদক জিতেছিলেন হিমা। আসামের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে হিমার এই সংগ্রাম বহু মানুষকে প্রাণিত করেছে। গ্রামের মেয়ে হিমার ফোব’স ইন্ডিয়ার বিচারে ইন্ডিয়া থার্টি আন্ডার থার্টির তালিকায় উঠে আসা কোন রূপকথার চেয়ে কম কিছু নয়। প্রথম ভারতীয় হিসেবে ইউনিসেফের যুব শুভেচ্ছা দূত হন হিমা।
১১) দ্যুতি চাঁদ :
এই দৌড়বিদের দখলে রয়েছে ১০০ মিটার দৌড়ের জাতীয় রেকর্ড। দ্যুতি দ্বিতীয় ভারতীয় দৌড়বিদ যে আন্তর্জাতিক ইভেন্টে স্বর্ণ পদক পেয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি গেমসে ২০১৯ সালে স্বর্ণ পদক পেয়েছেন দ্যুতি।
১২) সাক্ষী মালিক :
অলিম্পিকে প্রথম মহিলা কুস্তিগীর হিসেবে পদক জয়ের নজির গড়েছেন সাক্ষী। দেশকে ৫৮ কেজি ভিভাগে ব্রোঞ্জ পদক এনে দিয়েছিলেন।
১৩) সানিয়া মির্জা :
ভারতের লন টেনিসের রানী হলেন সানিয়া। ২০১৬ সালে রিও অলিম্পিকে রোহন বোপান্নার সঙ্গে যৌথভাবে দেশকে ব্রোঞ্জ পদক এনে দিয়েছিলেন সানিয়া। ডবলসে ৬টি গ্রান্ড স্ল্যাম জিতেছেন সানিয়া মির্জা।
১৪) নাগাঙ্গম বালা দেবী :
ভারতের মহিলা ফুটবল দলের স্ট্রাইকার হলেন নাগাঙ্গম বালা দেবী। স্কটিশ ক্লাব রেঞ্জার্স এফ সি-র সঙ্গে আঠারো মাসের চুক্তি করেছিলেন বালা দেবী। তিনিই প্রথম ভারতীয় মহিলা ফুটবলার যে কিনা পেশাদারি ফুটবলের জন্য ইউরোপীয় কোন ক্লাবের সঙ্গে চুক্তিকে আবদ্ধ হল। এশিয়া থেকে রেঞ্জার্স ক্লাবে তিনিই প্রথম খেলতে গেলেন। প্রথম ভারতীয় হিসেবে ইউরোপীয় লিগে গোল করার নজির রয়েছে তার। ২০১০ থেকে দেশের হয়ে ৮০ টি ম্যাচে এখনও ৬৫ টি গোল করেছেন বালা দেবী।
১৫) মানসী যোশী :
পা হারিয়েও তিনিও অনন্যা, ২১ বছর বয়সে মানসীর পা অ্যাম্পুটেড করতে হয়। দুর্ঘটনার আতঙ্ক থেকে বেরিয়ে আসতে ব্যাডমিন্টন খেলা শুরু করেন মানসী। টাইম ম্যাগাজিন মানসীকে প্যারা অ্যাথলিটের দুনিয়ায় আগামী প্রজন্মের নেত্রী হিসেবে মনোনীত করে। মিক্সড ডবলসের জন্য মানসী এখন প্রশিক্ষন নিচ্ছেন।