মিলল না আদালতের রক্ষাকবচ, গরু পাচার মামলায় ধাক্কা কেষ্টর
রক্ষাকবচের আবেদন খারিজ, হাই কোর্টে ধাক্কা খেলেন অনুব্রত মণ্ডল। তবে সূত্রের খবর, তিনি আগাম জামিনের জন্য হাই কোর্টের অন্য বেঞ্চে যেতে পারেন।
গরু পাচার মামলায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অনুব্রত। ১৪ মার্চ নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেওয়ার জন্য তাঁকে সমন পাঠায় সিবিআই। তাঁকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে, এই আশঙ্কায় তার আগেই রক্ষাকবচ চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন তিনি। শুক্রবার তাঁর রক্ষাকবচের আবেদন খারিজ করে দিল আদালত। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার মন্তব্য, ‘‘বার বার আদালতকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না। কোনও তদন্তে আদালত এ ভাবে সিবিআইয়ের হাত বাঁধতে পারে না।’’
অনুব্রতের আইনজীবী আদালতে এর আগে জানিয়েছিলেন, তদন্তে সাহায্য করতে প্রস্তুত তাঁর মক্কেল। তবে যেন কোনও কঠোর পদক্ষেপ না করা হয়। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ হল শুক্রবার। তবে তিনি আগাম জামিনের জন্য হাই কোর্টের অন্য বেঞ্চে যেতে পারেন।
শুক্রবার বিচারপতির বক্তব্য, ‘‘অনুব্রত যে অভিযোগ করেছেন, সেই মনোভাব আমি দেখছি না। সিবিআই মানেই ড্রাগন এমন নয়। বৃহত্তর স্বার্থে কথা ভাবতে হবে। এই অবস্থায় সিবিআইয়ের হাত কি বেঁধে দেওয়া যায়? আগে দুর্গাপুর ডাকা হয়েছিল। তাই কলকাতায় আসতে বলা হয়েছিল। এ বার তো আপনাকে নিজাম প্যালেসে ডাকা হয়েছে। সমস্যা কোথায়?’’
সিবিআই আইনজীবী এম ভি রাজু বলেন, ‘‘উনি যদি এতটাই আশঙ্কায় থাকেন, তা হলে কেন আগাম জামিনের আবেদন করেননি?
উনি তো সব জায়গায় যাচ্ছেন। সিবিআইয়ের কাছে আসার সময় নানান সমস্যা। ওঁর ফেসবুক দেখুন। যে রোগের কথা বলা হচ্ছে, তার জন্য কেন মেডিক্যাল বোর্ড? তিনি প্রভাবশালী বলেই এ সব সম্ভব!’’
প্রসঙ্গত, গত ৭ মার্চ অনুব্রতকে নোটিশ পাঠায় সিবিআই। ১৪ মার্চ নিজাম প্যালেসে কেষ্টকে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়। সকাল ১১টায় তাঁকে হাজির থাকতে বলা হয়। এ নিয়ে চতুর্থবার তাঁকে তলব করা হল। শেষ বার কেষ্টকে তলব করা হয়েছিল ২৫ ফেব্রুয়ারি। সে বারে শারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়ে হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছিলেন। তারও আগে তিন বার হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছিলেন।
কখনও নির্বাচনী ব্যস্ততা, কখনও শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে। কেষ্টর আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেলের বহুমূত্র রোগ এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা-সহ একাধিক রোগ রয়েছে। যে কারণেই গ্রেপ্তারি এড়াতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু এই মামলাতে এবার ধাক্কা খেলেন কেষ্ট।
অনুব্রতর পুরো আবেদন ছিল, তিনি সিবিআই তদন্তে সহযোগিতা করবেন। কিন্তু তাঁকে যেন গ্রেফতার না করা হয় এবং বাড়ির কাছে কোনও জায়গায় যেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
আদালতের বক্তব্য, অনুব্রত আগাম জামিনের আবেদন করেনি। গ্রেপ্তার হলে বা আশঙ্কা থাকলে আগাম জামিন নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে আদালত সেই তথ্য প্রমাণ খুঁজে পায়নি। তা ছাড়া আগাম জামিন নিতে গেলে হাই কোর্টের অন্য বেঞ্চে আবেদন করতে হয়। এই বেঞ্চ ওই আবেদন শুনবে না।