রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট ভারতীয় বিচারপতির, সেনা অভিযান বন্ধের নির্দেশ আন্তর্জাতিক আদালতের
ইউক্রেনে রাশিয়াকে সেনা অভিযান বন্ধ করতে বলল আন্তর্জাতিক আদালত। ইউক্রেনে রাশিয়ার এই সামরিক অভিযান নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে ভোটাভুটি হয়। সেখানে ১৩টি দেশের বিচারপতি রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। পক্ষে ভোট দিয়েছেন দু’টি দেশের বিচারপতি।
তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, যাঁরা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ভারতীয় বিচারপতি দলবীর ভন্ডারী। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় এবং নিরাপত্তা পরিষদে যখন ভারত রাশিয়ার এই আগ্রাসনী নীতির বিরুদ্ধে ভোটদান থেকে বিরত থেকেছে, কূটনৈতিক স্তরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা উচিত বলে প্রস্তাব দিয়েছে, সেখানে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারপতি ভন্ডারীর রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটদান নয়াদিল্লিকে অস্বস্তিতে ফেলল বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।
কে এই দলবীর ভন্ডারী?
আন্তর্জাতিক আদালতে দ্বিতীয় বার বিচারপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন দলবীর। ২০১২-তে প্রথম বার নির্বাচিত হয়েছিলেন। দ্বিতীয় বার নির্বাচিত হন ২০১৮-য়। দ্বিতীয় বার ব্রিটেনের মনোনীত প্রার্থী বিচারপতি গ্রিনউডকে হারিয়ে নির্বাচিত হন দলবীর।
বুধবার রাশিয়া-ইউক্রনের বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে শুনানি হয়। তখন আদালত বলে, “ইউক্রেনে রাশিয়ার এই সামরিক অভিযান নিয়ে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন এবং চিন্তিত। রাশিয়া যে ভাবে বল প্রয়োগের রাস্তায় হেঁটেছে, তা আন্তর্জাতিক নিয়মকে লঙ্ঘন করার সামিল। দ্রুত এই সামরিক অভিযান থেকে নিজেদের সরিয়ে আনুক রাশিয়া।”
আন্তর্জাতিক আদালতে ১৫টি দেশের বিচারপতি রয়েছেন। আমেরিকা, স্লোভাকিয়া, ফ্রান্স, মরক্কো, সোমালিয়া, উগান্ডা, ভারত, জামাইকা, লেবানন, জাপান, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়ার বিচারপতিরা এবং এক জন অস্থায়ী বিচারপতি রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক আদালতের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন আদালতের ভাইস-প্রেসিডেন্ট রাশিয়ার কিরিল জেভরজিয়ান এবং চিনের বিচারপতি সু হানকিন।
আন্তর্জাতিক আদালতে ইউক্রেন অভিযোগ করেছিল যে, লুহানস্ক এবং ডনেৎস্ক (একত্রে ডনবাস)-এ রাশিয়া যে গণহত্যার অভিযোগ তুলেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। শুধু তাই নয়, এই অভিযোগকে সামনে রেখেই অন্যায় ভাবে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে মস্কো। এর পরই কিভ আদালতের কাছে আর্জি জানায় তারা যেন রাশিয়াকে এই সামরিক অভিযান বন্ধের নির্দেশ দেয়। গত সপ্তাহে ইউক্রেনের প্রতিনিধি অ্যান্টন কোরিনেভিচ আন্তর্জাতিক আদালতে বলেন, “রাশিয়ার এই আগ্রাসনী নীতি বন্ধ করতে আদালত হস্তক্ষেপ করুক।” বুধবার সেই মামলার শুনানি হয়। তখন আদালতে রাশিয়াকে সামরিক অভিযআন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে।
আদালতের এই নির্দেশের পরই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, “আন্তর্জাতিক আদালতে ইউক্রেনের জয় হল। আন্তর্জাতিক আইন মেনে আদালত রাশিয়াকে সামরিক অভিযান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। এই নির্দেশ মানা উচিত রাশিয়ার। এর পরেও তারা যদি সেই নির্দেশ না মানে তা হলে আগামী দিনে রাশিয়া আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।”