সন্ত্রাসবাদী হামলা বাড়বে, ভারতকে হুমকি জঙ্গি সংগঠন আইএসের
জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে ভারতে। সম্প্রতি তাদের ১২ মিনিটের একটি ভিডিও সামনে এসেছে। তাতে তারা স্পষ্ট বলেছে, ‘জেহাদ’ জারি থাকবে। দেশজুড়ে অস্থিরতা ও নাশকতা ছড়ানোই তাদের টার্গেট। ভারতকে তাদের স্পষ্ট হুমকি, সন্ত্রাসবাদী হামলা বাড়বে। প্রস্তুত থাকুক নয়াদিল্লি। আর এই লক্ষ্যটিকে সামনে রেখেই ধীরে ধীরে ঘর গুছিয়ে নিচ্ছে আইএস। অন্যতম নিশানা যে পুলিস বা সেনাবাহিনী, তা ভিডিও বার্তায় স্পষ্ট করেছে তারা। ইতিমধ্যেই এই তথ্য হাতে এসেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। আইএসের হুঁশিয়ারিতে উদ্বেগ বেড়েছে তাঁদের। কোথায়, কীভাবে তারা নিজেদের প্রস্তুত করছে এবং কারা রয়েছে এর নেপথ্যে, তা জানতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন গোয়েন্দারা। একইসঙ্গে এই বিষয়ে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে সব রাজ্যকে।
একের পর এক তল্লাশি ও গ্রেপ্তারির জেরে দেশে আইএস ব্যাকফুটে। একমাত্র কাশ্মীরেই তারা জঙ্গি কার্যকলাপ কিছুটা হলেও অব্যাহত রেখেছে। পাকিস্তানের মাটি ব্যবহার করে সন্ত্রাসের কলকাঠি নাড়ছে তারা। উপত্যকার তরুণ সম্প্রদায়ের মগজ ধোলাই চালিয়ে তাদের সরকার তথা দেশবিরোধী কাজে উস্কানি দিচ্ছে। এক কথায় আইএস চাইছে, মানুষের মনে তাদের প্রতি আতঙ্ক আগের জায়গায় নিয়ে যেতে। এক্ষেত্রে তারা সামনে রেখেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’কে। তাদের দিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে সেনা ও কাশ্মীর পুলিসের বিরুদ্ধে। উপত্যকা ছেড়ে এই সংগঠন এখন অন্য রাজ্যেও ছড়িয়ে পড়ছে। গোয়েন্দাদের কাছে খবর, গোটা কার্যকলাপের নেপথ্যে আইএসের সঙ্গে রয়েছে লস্কর-ই-তোইবাও। আইএসের লক্ষ্য, জঙ্গি দমনে বিভিন্ন রাজ্যে মোতায়েন স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের সদস্যদের উপর লাগাতার আঘাত। তাতে ফোর্সের মনোবল ভাঙবে। জঙ্গি সংগঠনও চাঙ্গা হবে।
এই প্রচার চালাতেই ১২ মিনিটের একটি ভিডিও দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে দিয়েছে আইএস। নাম দেওয়া হয়েছে ‘দ্য বিলিভার্স ইন জিহাদ উইল কন্টিনিউ’। সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে জঙ্গি কার্যকলাপে জোর দেওয়ার পাঠ দেওয়া হয়েছে তাতে। সেনা বা পুলিসের অত্যাচারের ভুয়ো দৃশ্য ভিডিওয় তুলে ধরেছে তারা। ঠান্ডা গলায় আইএসের শীর্ষ জঙ্গিদের বার্তা, সেনা বা পুলিসের আধিকারিকরা যেন তাঁদের পরিবারকে সামলে রাখেন।
কী কায়দায় হবে হামলা? ইঙ্গিত রয়েছে তারও। ফোর্সের পরিবারের সন্তান বা পরিবারের কাউকে অপহরণ করে খুন করার কথা বলেছে জঙ্গিরা। তাঁদের বাড়িতেও গ্রেনেড হামলার হুমকি রয়েছে। পাশাপাশি তারা জানিয়েছে, সেনা ছাউনিতে ড্রোন হামলা হবে।
আইএসের এই ভিডিও বার্তার পর রীতিমতো নড়েচড়ে বসেছেন গোয়েন্দা আধিকারিকরা। তাঁদের হাতে আসা তথ্য অনুযায়ী, এই ভিডিওটি দেশের বাইরে তৈরি। কাশ্মীরে আইএসের হয়ে কাজ করা জঙ্গিদের মাধ্যমে তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারির মাধ্যমে জাল বিস্তার করতে শুরু করেছেন গোয়েন্দারা। আর চলছে জঙ্গিদের খোঁজে তল্লাশি। এতটুকুও রেয়াত করা হবে না—এটাই লক্ষ্য ভারতীয় বাহিনীর।