সরকারি পলিটেকনিক কলেজগুলিতে ৪০০ আসন বাড়াল কারিগরি শিক্ষা দপ্তর

স্রেফ ৫০ টাকা মাসিক খরচে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার সুযোগ আরও বাড়ছে। রাজ্যের সরকারি পলিটেকনিক কলেজগুলিতে ৪০০টি আসন বাড়াল কারিগরি শিক্ষা দপ্তর। রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের স্কিল ট্রেনিং দিয়ে চাকরি নিশ্চিত করার কাজ আগেই শুরু করেছে এই দপ্তর। এবার প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা লাভে ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীদের কাছেও পরিসর আরও প্রসারিত হচ্ছে। সামনের শিক্ষাবর্ষ থেকেই কলেজগুলি বর্ধিত আসনে ভর্তি নিতে পারবে বলে জানা যাচ্ছে।
রাজ্য জুড়ে আটটি সরকারি পলিটেকনিক কলেজে বাড়ানো হচ্ছে এই আসন। উত্তর ২৪ পরগনার বেড়াচাঁপার এজেসি বোস পলিটেকনিকে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশনস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আসন ৩০টি থেকে বেড়ে হচ্ছে ৬০টি। পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল পলিটেকনিকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আসনও বাড়ছে ৩০টি। সেই জেলারই কন্যাপুর পলিটেকনিকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ২০টি এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে ৩০টি আসন বাড়ছে। পশ্চিম বর্ধমানের আরেক কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রূপনারায়ণপুরের নজরুল সেন্টিনারি পলিটেকনিকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বাড়ছে ৩০টি আসন। পূর্ব বর্ধমানের কালনা পলিটেকনিকে সিভিল, কম্পিউটার সায়েন্স এবং ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৩০টি করে মোট ৯০টি আসন বাড়ছে। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের কে জি ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে কম্পিউটার সায়েন্সের ৩০টি আসন বাড়ছে। বীরভূমের সিউড়ির রামকৃষ্ণ শিল্প বিদ্যাপীঠের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আসন বাড়ছে ২০টি। হুগলির ব্যান্ডেলের ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্ভে ইনস্টিটিউটের সিভিলের আসন ৩০টি বেড়ে হচ্ছে ৬০টি।
ইলেকট্রনিক্স এবং টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৩০টি আসন বাড়ছে কলকাতার সেন্ট্রাল ক্যালকাটা পলিটেকনিকেরও। নদীয়ার কৃষ্ণনগরের বিপিসি ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির কম্পিউটার সায়েন্স এবং উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ পলিটেকনিকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আসন ৩০টি থেকে বেড়ে হচ্ছে ৬০। শিক্ষক মহল মনে করছে, এই আসনবৃদ্ধির ফলে আর্থিকভাবে অনগ্রসর অথচ মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের জন্য প্রযুক্তিশিক্ষার দরজা খুলে যাবে। কারণ, মাত্র মাসিক ৫০ টাকা ফি দিয়েই কলেজগুলিতে পড়া যায়। এর জন্য পলিটেকনিকের প্রবেশিকায় উত্তীর্ণ হতে হয়। এছাড়া মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ‘পলি ৪০’ যোগ্যতামান যাচাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমেও খোলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাঠের দরজা। পরবর্তীতে জেলেট পরীক্ষার মাধ্যমে ডিপ্লোমা থেকে সরাসরি ডিগ্রি ইঞ্জিনিয়ারিং অর্থাৎ বিটেকে উত্তরণের সুযোগও থাকে। যে যে কলেজগুলিতে আসন বাড়বে সেগুলির অধ্যক্ষ তথা অফিসার ইনচার্জদের বলা হয়েছে, তারা যেন কেন্দ্রীয় নিয়ামক সংস্থার পোর্টালে আবেদন জানায়। চূড়ান্ত ছাড়পত্র তাদের তরফেই আসবে। তবে, এর জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো এবং শিক্ষক সংখ্যা খতিয়ে দেখবে সংস্থাটি। এ বিষয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী কারিগরী শিক্ষামন্ত্রী হুমায়ুন কবির। তিনি বলেন, পলিটেকনিকগুলিতে যেমন নতুন বিষয় চালু হয়েছে, তেমনই চালু বিষয়গুলিতে আসন বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো আমরা ইতিমধ্যেই উন্নত করেছি। কিছু কলেজে সেই কাজ এখনও চলছে। প্রয়োজনীয় শিক্ষকও নিয়োগ করা হয়েছে। এর ফলে ছাড়পত্র পাওয়া নিয়ে আমরা আশাবাদী।