উচ্চ শিক্ষায় ভর্তিতে বিবেচ্য নয় দ্বাদশের নম্বর, চালু হচ্ছে অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা
উচ্চশিক্ষায় ভর্তিতে আর বিবেচ্য নয় দ্বাদশের নম্বর। পরিবর্তে চালু হচ্ছে অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা। তবে শুধুমাত্র দেশের ৪৫টি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং সেগুলির অধীন কলেজগুলির জন্য। এমনই সিদ্ধান্ত শিক্ষামন্ত্রকের। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান এম জগদেশ কুমার জানিয়েছেন, আগামী জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে আয়োজিত হবে কমন ইউনিভার্সিটি এন্ট্রান্স টেস্ট (কুয়েট)। পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ)। তাদের প্রকাশিত মেধাতালিকার ভিত্তিতেই ভর্তি নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে।
এই ঘোষণার ফলে একইসঙ্গে আশা-আশঙ্কার দোলাচলে রাজ্যের পড়ুয়ারা। কারণ প্রতিবছর খবর আসে, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলিতে ভর্তির যোগ্যতা প্রায় ১০০ শতাংশ নম্বর। গতবার তো দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সাতটি কলেজ অন্তত ১০টি বিষয়ে ১০০ শতাংশ নম্বরই চেয়েছিল। মিরান্ডা হাউজ, লেডি শ্রীরাম বা হিন্দু কলেজের মতো প্রতিষ্ঠানে ভর্তির দ্বিতীয় বা তৃতীয় মেধাতালিকার সর্বনিম্ন (কাট অফ) নম্বরও ৯৮ শতাংশের উপরে ঘোরাফেরা করে। আর সেখানেই পিছিয়ে পড়েন রাজ্যের পড়ুয়ারা। কারণ, উচ্চ মাধ্যমিকে নম্বরের হার বাড়লেও সর্বভারতীয় স্কুল বোর্ডগুলির তুলনায় তা কিছুটা পিছিয়ে। এবার প্রবেশিকা চালু হলে তার সুযোগ নিতে পারেন বাংলার পড়ুয়ারা। কারণ, প্রাপ্ত নম্বর আর মাপকাঠি থাকছে না। আবার কুয়েট যে ১৩ টি ভাষায় দেওয়া যাবে, সেগুলির মধ্যে রয়েছে বাংলাও। তাই উচ্চ মাধ্যমিকের নম্বর যাই হোক, কুয়েটে ভালো ফল করলে দিল্লি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ), জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় বা বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএইচইউ) মতো প্রতিষ্ঠানগুলির দরজা খুলে যাবে। আরও একটি বিষয় রয়েছে। এ রাজ্যের প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এখনও নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে রক্ষণশীল। তার প্রভাব পড়ে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর পড়ার ক্ষেত্রে।
এবার আসা যাক আশঙ্কার কথায়। এই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হবে এনসিইআরটি সিলেবাসের ভিত্তিতে। এমসিকিউ পদ্ধতির প্রশ্নে থাকবে নেগেটিভ মার্কিংও। রাজ্যের সিলেবাস এনসিইআরটি থেকে অনেকটাই আলাদা। তাই এই প্রবেশিকার জন্য আলাদা করে প্রস্তুতি নিতে হবে পড়ুয়াদের। কিন্তু শিক্ষামহলের মত, সেই প্রবণতা অনেকেরই থাকে না। বিশেষ করে কলা বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে। এই অবস্থায় রাজ্যের পড়ুয়াদের স্বার্থে সরাসরি কুয়েটের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতীর তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)।