করোনা মোকাবিলায় জুনিয়র ডাক্তারদের আহ্বান মমতার, দেওয়া হবে শংসারপত্র
যত দিন যাচ্ছে, আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বুধবার সন্ধ্যার বুলেটিন জানাচ্ছে, রাজ্যে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। হয়েছে ৫০৬। এই অবস্থায় সব মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্নদেরও করোনা যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণের ডাক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি বলেন, পড়াশোনার ক্ষতি না করে যদি ইন্টার্নশিপের সময়ের একাংশ (এক মাস) করোনা যুদ্ধে দেন, করোনা যোদ্ধার শংসাপত্র পাবেন। পাশাপাশি ইনসেনটিভও দেওয়া হবে। একইভাবে স্নাতকোত্তরের প্রস্তুতি নেওয়া চিকিৎসকরাও করোনা লড়াইয়ে যুক্ত হলে ফি বছর ১০ শতাংশ করে নিট পিজি পরীক্ষায় তিন বছরের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ ইনসেনটিভ পাবেন। মমতা জানান, কোন কোভিড হাসপাতালে কত বেড রয়েছে, এরপর ঘণ্টায় ঘণ্টায় আপডেট করা হবে। এদিন বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে ফের রোগী ফেরাতে নিষেধ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই পরিস্থিতিতে আজ মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা প্রাইভেট হাসপাতালগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। পাশাপাশি, পুলিশ কমিশনার এদিন নির্দেশ দিয়েছেন, পুলিশকর্মীদের পরিবারের কেউ আক্রান্ত হলে এবার থেকে তাঁদের চিকিৎসার বিষয়ে নিয়মিত খোঁজ নেবে লালবাজার।
এদিকে শিলিগুড়ির প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতির্ময় মল্লিকের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, সেনার পূর্বাঞ্চলীয় সদর দপ্তর ফোর্ট উইলিয়ামে ১৮ জন সেনা করোনায় আক্রান্ত। দক্ষিণ কলকাতার একটি নামজাদা হাসপাতালে সন্ন্যাসী, রোগী, হাসপাতালের কর্মী মিলিয়ে মোট ৫৬ জন আক্রান্ত। মুচিবাজারের ১০০ জন বিক্রেতার নমুনা পরীক্ষা করা হলে পাঁচজনের করোনা মিলেছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এক আধিকারিকও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর। কৃষি বিপণন দপ্তরের এক কর্মীর করোনা ধরা পড়ায় তাদের সদর দপ্তর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কসবায় কৃষি দপ্তরের এগ্রি মার্কেটিং বোর্ড ও পোদ্দার কোর্টে কৃষি বিপণন দপ্তরের ডাইরেক্টরেটের অফিসও বন্ধ করা হয়েছে। পুরনো খাদ্যভবন চত্বর, অত্যাবশকীয় পণ্য সরবরাহ নিগমের অফিস জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে, দ্রুত করোনা পরীক্ষার ফল জানতে রাজ্যজুড়ে শীঘ্রই র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা চালু হবে বলে সূত্রের খবর।
এদিন মমতা বলেন, এখন পর্যন্ত ১২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক রাজ্যে এসেছেন। আরও তিন-চারটি ট্রেন আসবে। চেন্নাই থেকে পজিটিভ হওয়ার পর বিমানে আসছে লোক। কলকাতা বিমানবন্দরে কেন পরীক্ষা হবে না? মেদিনীপুরে হাসপাতালে গিয়ে ওঁরা নিজেরাই জানিয়েছেন পজিটিভ। কীভাবে এলেন, বুঝলাম না। পরিযায়ীদের মাধ্যমেই ১০ শতাংশের বেশি করোনা বেড়েছে। দিনে গড়পড়তা রাজ্যে প্রায় সাড়ে নয় হাজার করোনা পরীক্ষা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমরা ১০৪ টি সেফ হোম সেন্টার করছি। এটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার নয়। মূল উদ্দেশ্য আশঙ্কাজনকদের জন্য হাসপাতালের শয্যা যতটা সম্ভব খালি রাখা। প্রয়োজনে আমার বাড়িও সেফ হাউসের জন্য দিতে পারি। করোনা আক্রান্ত তৃণমূল বিধায়ক তমোনাশ ঘোষের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে তিনি জানান। বলেন, ওঁর পরিবারের কয়েকজন কিন্তু সুস্থ হয়ে গিয়েছে।