পথচলা শুরুর আগেই বিপত্তি! ভুল বাংলা জ্বলজ্বল করছে শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশনের বোর্ডে
বাংলার মাটি। পরিষেবা গ্রহণকারীদের সিংহভাগ বাঙালি। পরিষেবাস্থলে বিবিধ নির্দেশ ও পরামর্শ ইংরেজি হিন্দির পাশাপাশি বাংলাতেও লেখা। কিন্তু সেই বাংলায় বিস্তর ভুল, অনেকক্ষেত্রে বিভ্রান্তিও।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কথা হচ্ছে। সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত ট্রেন ছোটা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। চোখ ধাঁধানো সাজে সেজে উঠেছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর শিয়ালদহ স্টেশন। তবে নির্দেশিকা বোর্ডে বাংলা ভাষার কিছু নমুনা দেখলে সেই মুগ্ধতার রেশ এক ঝটকায় কেটে যেতে পারে। প্রশ্ন উঠতে পারে, এগুলো কি নিছকই চোখ এড়িয়ে যাওয়া? না কি গাফিলতি ও অবহেলার চরম নিদর্শন?
দৃষ্টান্ত হিসাবে ধরা যেতে পারে মেট্রো স্টেশনের মূল গেট দিয়ে ঢুকে টিকিট কাউন্টারের পাশে লাগানো নির্দেশিকা বোর্ডটিকে। ‘সল্টলেক স্টেডিয়াম’ সেখানে হয়ে গিয়েছে ‘সল্ট লেক স্টেডিয়ায।’ সেক্টর ফাইভকে অদ্ভুতভাবে লেখা হয়েছে। ‘স্টেশন’ শব্দটি হয়েছে ‘স্টেশান।’এখানেই শেষ নয়। যাত্রীদের কী করবেন, কী করবেন না, সে সংক্রান্ত তালিকায় নজর বোলালেও ঝটকা খেতে হয়। ‘প্ল্যাটফর্ম’ হয়ে গিয়েছে ‘প্যাটফর্ম’, ট্রেনের ছাদে উঠবেন না বোঝাতে গিয়ে লেখা হয়েছে ট্রেনের ‘ছাতে’ উঠবেন না। ‘বরিষ্ঠ’ যাত্রী বলতে মেট্রো কর্তৃপক্ষ ঠিক কাদের বোঝাচ্ছেন, তা নিয়েও বিভ্রান্তির যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। একই ধন্দ ‘নির্মাণাধীন’ শব্দটি নিয়েও। ‘ব্যক্তি’ বানান লেখা হয়েছে ‘ব্যাক্তি।’এর পরই প্রশ্ন উঠছে, মেট্রোর সংশ্লিষ্ট বিভাগে কি বাংলা জানা কেউ নেই?
স্পষ্ট জবাব মেলেনি। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, স্টেশন পুরদস্তুর চালু হওয়ার আগে সব চেক করা হবে। “এখনও কিছু কাজ বাকি আছে। স্টেশনে যদি বাংলা বানান ভুল থাকে তাহলে পরিষেবা শুরুর আগে তা অবশ্যই সংশোধন করে নেওয়া হবে”, বুধবার বলেন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো নির্মাণকারী সংস্থা কেএমআরসিএল-এর জিএম এ কে নন্দী।
যদিও ব্যাপারটাকে এত সহজভাবে নিতে পারছে না অনেক মহলই। তাঁদের অভিযোগ, বাংলা ভাষার প্রতি অবহেলা ও তুচ্ছ—তাচ্ছিল্যেরই প্রতিফলন ঘটেছে কেন্দ্রীয় সরকারি এই পরিষেবায়। বাংলা পক্ষের শীর্ষ পারিষদ সদস্য তথা বিশিষ্ট চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাসের প্রতিক্রিয়া, “বহিরাগত দিয়ে কাজ করালে এমনই হবে। বাংলা ভাষার প্রতি মায়া, আবেগ তঁাদের নেই। বাংলা ভাষাকে ছোট করা, অবজ্ঞা করার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। সর্বস্তরে এর প্রতিবাদ দরকার।”