তৃতীয়বার সরকার গড়ার পর আজ প্রথম পাহাড় সফরে মুখ্যমন্ত্রী

এই মুহূর্তে পাহাড়ে কোনও একক ব্যাক্তি বা সংগঠন আর শেষ কথা নয়। জিটিএ নির্বাচনে বহুমুখী লড়াই হবে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।

March 27, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

পৃথক রাজ্যের বদলে এখন পাহাড়বাসীর দাবি, সামগ্রিক উন্নয়ন। আর তার জন্য প্রয়োজন গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিটিএ) নির্বাচন। রবিবার দার্জিলিং গিয়ে জিটিএ ভোটের ডঙ্কা বাজাতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।
২০২১-এ তৃতীয়বার সরকার গড়ার পর এই প্রথম পাহাড় সফর মুখ্যমন্ত্রীর। স্বভাবতই তুঙ্গে উঠেছে উন্মাদনার পারদ। মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে থাকবেন ৩১ মার্চ পর্যন্ত। এই পাঁচদিনের সফরে তিনি দু’টি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। রবিবার শিলিগুড়ির গোঁসাইপুরের উত্তরা গ্রাউন্ড থেকে শিলিগুড়ি‌ ও জলপাইগুড়ির প্রায় ১০ হাজার উপভোক্তার হাতে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা হাতে তুলে দেবেন তিনি। দ্বিতীয়টি দার্জিলিংয়ের ম্যালে। যেখানে সরকারি সুবিধা তুলে দেওয়া হবে দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলার দুই থেকে তিন হাজার মানুষের হাতে।

এই মুহূর্তে পাহাড়ে কোনও একক ব্যাক্তি বা সংগঠন আর শেষ কথা নয়। জিটিএ নির্বাচনে বহুমুখী লড়াই হবে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের। সম্প্রতি দার্জিলিং পুরসভা দখল করেছে অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি। অপ্রত্যাশিত এই জয়ের পরে জিটিএ নির্বাচনেও লড়ে সাফল্য অর্জনই লক্ষ্য হামরো পার্টির। ইতিমধ্যে কার্শিয়াং এবং কালিম্পংয়ে নিজেদের ভিত শক্ত করার কাজে নেমেছেন এডওয়ার্ড।

অন্যদিকে অনীত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা (বিজিপিএম) পাহাড়ের দ্বিতীয় শক্তিশালী দল হিসেবে উঠে এসেছে। দার্জিলিং পুরসভা ভোটে পেয়েছে ৯টি আসন। জিটিএ’র আওতাধীন দার্জিলিং, কার্শিয়াং ও মিরিক মহকুমা, শিলিগুড়ি মহকুমার কয়েকটি অংশ এবং গোটা কালিম্পং জেলায় নিজেদের জায়গা ধরে রাখতে মরিয়া অনীত এবং তার অনুগামীরা। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অনীত সহ পাহাড়ের অন্যান্য নেতাদের বৈঠকের সম্ভাবনাও প্রবল।

পাহাড়ে শেষবার পঞ্চায়েত নির্বাচন হয় ২০০০ সালে। আইন সংশোধন করে দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনও সম্পন্ন করার পক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আইনে সংশোধনের জন্য কেন্দ্রের কাছে দরবারও করেছেন একাধিকবার। তৃণমূলের বিনয় তামাং বলেন, জিটিএ নির্বাচন যদি সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে হয় তবে কেন্দ্রের সদিচ্ছা থাকলে পঞ্চায়েত ভোটও একসঙ্গে করা যেতে পারে।

দার্জিলিং পুরভোটে জোট হয়েছিল তৃণমূল ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার। তৃণমূল ১০টি আসনে লড়ে জয়ী হয়েছিল দু’টিতে। বাকি ২২টি আসনে প্রার্থী দিয়ে মোর্চা পেয়েছিল তিনটি আসন। জিটিএ নির্বাচনে তৃণমূল কারও সঙ্গে জোট করবে কি না, বা দলের নির্বাচনী কৌশল কী হবে সেই নিয়ে জনসমক্ষে মুখ না খোলার বার্তা দেওয়া হয়েছে সেখানকার নেতাদের। কারণ এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন স্বয়ং মমতা।

দার্জিলিং পুরভোটে মুখ থুবড়ে পড়ার পর, বিজেপি ও জিএনএলএফ‌ পাহাড়ের রাজনীতিতে তুলনায় অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে বলেই রাজনৈতিক মহলের মত। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে বিজেপি-জিএনএলএফ-এর ভোটের হার ৫১.৬ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ৭.৩ শতাংশ। বিমল গুরুং ও রোশন গিরিরা ফের গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে ‘সুড়সুড়ি’ দিচ্ছে বলেই রাজনৈতিক মহলের মত। প্রসঙ্গত, কার্শিয়াং, কালিম্পং ও মিরিক পুরসভাগুলির মেয়াদ শেষ হচ্ছে এপ্রিল মাসে। অতএব, এই তিনটি পুরসভার ভোট নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে পাহাড়ে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen