ভোটে জিতেই মোদী সরকারের পাল্টা উপহার জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, কটাক্ষ মমতার

শিলিগুড়ির সভামঞ্চ থেকে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলায় পৃথক ১১০ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

March 28, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

মাঝে ভোটের বিরতি। উত্তরপ্রদেশ সহ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভার নির্বাচন মিটতেই চড়ছে পেট্রল-ডিজেলের দাম। লাগাতার। পাল্লা দিচ্ছে রান্নার গ্যাসও। মূল্যবৃদ্ধির আঁচে ইন্ধন জোগাচ্ছে তেলের লাগাতার দাম বৃদ্ধি। আর কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে এই ইস্যুকেই হাতিয়ার করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিলিগুড়িতে সরকারি সভায় তিনি বললেন, ‘গত ছ’দিনে পাঁচবার দাম বাড়ানো হয়েছে পেট্রল-ডিজেলের। রান্নার গ্যাসের দামও হাজার ছাড়িয়েছে। উত্তরপ্রদেশে জিতেছে তো প্রধানমন্ত্রীর দল! কোথায় মানুষকে সুরাহা দেবেন, তা না করে ৫০০ টাকার জিনিস হাজার টাকা করে দিলেন! তার উপর বাড়ছে জীবনদায়ী ওষুধের দামও।’ কেন্দ্রীয় সরকারকে মমতার শ্লেষ, ‘ভোটে জেতার পর আসলে এভাবে পাল্টা উপহার দিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী! সংসার সামলাতে হিমশিম গৃহস্থের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে।’

শিলিগুড়ির সভামঞ্চ থেকে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলায় পৃথক ১১০ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে দেবী চৌধুরানি মন্দিরের পুনর্নির্মাণ, জরদা নদীর উপর সেতু। বিধবাভাতা, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধাও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ১৫ লক্ষ মানুষের কাছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত রাজ্যে দুয়ারে সরকার প্রকল্পের ১ লক্ষ ৩৯ হাজার শিবির হয়েছে। তাতে এসেছেন প্রায় সাড়ে ৬ কোটি মানুষ। সাড়ে চার কোটি মানুষ বিভিন্ন পরিষেবা পেয়েছেন। রাজ্যে ২১ লক্ষের জন্য বিধবা ভাতা, ৭২ লক্ষ মানুষ জয়বাংলা প্রকল্পের আওতায় প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে পেনশন পাচ্ছেন।’ শিল্প হোক বা পর্যটন, সরকারের অক্লান্ত পরিশ্রমের পরও বাংলাকে অশান্ত করে তোলার ‘ষড়যন্ত্রের’ জন্য আক্ষেপ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ‘মূল্যবৃদ্ধির সমস্যা থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা চলছে। মৃতদেহ নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। বিরোধীরা চায় না, এখানে কর্মসংস্থান হোক।’ এই প্রসঙ্গে রামপুরহাটের ঘটনার প্রসঙ্গ টানেন মমতা। তাঁর সাফ কথা, ‘আমরা চাই, প্রকৃত ঘটনা সামনে আসুক। বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছিলাম। ওদের কাজ অনেক দূর এগিয়েছিল। খোঁজখবরও করছিল। পুলিস সারা বছর কাজ করে। এর মধ্যে একটা ঘটনার জন্য পুলিসের দিকে আঙুল তোলা উচিত নয়। কোনও ঘটনা ঘটলে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না, সেটা দেখা উচিত। এখন সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাকেও স্বাগত জানাই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে রাজ্য। কিন্তু তদন্ত যেন সঠিক পথে চলে। কিন্তু সত্য উদ্ঘাটন না করে অন্য কারও কথা মতো চললে কিন্তু পথে নেমে আন্দোলন করব।’ মমতার স্পষ্ট কথা, ‘রামপুরহাটের ঘটনা আসলে ষড়যন্ত্র। ওখানে খুন হয়েছেন তৃণমূলের নেতা। যাঁদের বাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে, তাঁরাও তৃণমূলের। আর নিশানা করা হচ্ছে তৃণমূলকেই! বীরভূমের দেউচা-পাঁচামির কয়লা খনি প্রকল্পে বাধা দিতেই হয়তো রামপুরহাটের এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এই প্রকল্পে ১ লক্ষ কর্মসংস্থান হবে। কিন্তু বাংলায় উন্নয়ন হোক, কর্মসংস্থান হোক, তা বিরোধীরা চায় না। তাই বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’

মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘শিল্পে এক নম্বর হবে বাংলা। সেই চেষ্টা বানচালের চেষ্টা চলছে। আগুন ধরানো হচ্ছে। বাইরে থেকে টাকা নিয়ে এসে বাংলার নামে কুৎসা করা হচ্ছে।’ বিরোধীদের উদ্দেশে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘আমাকে যা খুশি বলুন, মাতৃভূমিকে গালাগালি দেবেন না’।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen