নয়দিনে আটবার! পেট্রল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধিতে ফের মোদী সরকারের রেকর্ড!
রেকর্ড গড়ল কেন্দ্রের মোদী সরকার। লিটারপিছু আরও ৮৪ পয়সা বাড়ল পেট্রলের দাম। ন’দিনে আটবার। ফলে ১০৯ টাকা ৬৮ পয়সার পরিবর্তে আজ থেকে কলকাতায় পেট্রলের দাম ১১০ টাকা ৫২ পয়সা। আর ৮০ পয়সা বেড়ে ডিজেলের দাম হল ৯৫ টাকা ৪২ পয়সা। কলকাতায় গত ৩ নভেম্বর পেট্রলের সর্বোচ্চ দর ছিল লিটার পিছু ১১০.৫ টাকা। এদিন সেই দর টপকে রেকর্ড গড়ল পেট্রল।
আন্তর্জাতিক বাজারে নামছে জ্বালানি তেলের দর। আর ভারত হাঁটছে তার উল্টো পথে। সাধারণ মানুষকে নাজেহাল করে ক্রমশ লাগামছাড়া হচ্ছে পেট্রল-ডিজেল। শুরুটা হয়েছিল গত ২২ মার্চ। মাঝে মাত্র একদিনের বিরতি। অর্থাৎ, এই ন’দিনে ৫ টাকা বেড়েছে পেট্রলের দাম। আর ডিজেল? এই ক’দিনে এই জ্বালানির বৃদ্ধি ৪ টাকা ৮০ পয়সা। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন অবশ্য বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বিশ্ববাজারে তেলের দাম বৃদ্ধির যুক্তি দিয়েই দায় সারছেন। মঙ্গলবারও সংসদে তিনি যুদ্ধ-সাফাই গেয়েছেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে তো ইদানীং অশোধিত তেলের দাম কমছে! তাহলে কেন তার সুরাহা দেশবাসীকে দেওয়া হবে না? এই প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। তার কোনও জুতসই জবাবও কিন্তু দেননি নির্মলা।
তথ্য বলছে, ব্যারেল প্রতি ব্রেন্ট ক্রুডের দাম আর ১১৩ ডলারে নেই। বরং তা নেমে এসেছে ১০৬.৫৬ ডলারে। মার্কিন লাইট ক্রুডের দরও পাঁচ শতাংশ কমে প্রায় ১০০ ডলার। চীনের সাংহাইয়ে লকডাউন এবং ইউক্রেনে যুদ্ধ ঝিমিয়ে পড়ার কারণেই তেলের দর কমছে বলে জানা গিয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের শান্তি প্রক্রিয়া যত এগবে, ততই স্থিতিশীল হবে বিশ্ব বাজার। অথচ, তার রেশ ভারতে আসছে না।
ওয়েস্ট বেঙ্গল পেট্রলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক প্রসেনজিৎ সেন বলেন, ‘জ্বালানির দাম বাড়ায় গ্রাহকদের পাশাপাশি আমরাও নাজেহাল হচ্ছি। এই বৃদ্ধিতে আমাদের মূলধনে টান পড়ছে। আমরা দেখছি, রাজ্য সরকার কেন শুল্ক কমাচ্ছে না, তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু সহজ কথাটি হল, কেন্দ্র তার এক্সাইজ ডিউটি কমালে স্বাভাবিক নিয়মে রাজ্যের করও কমবে। কেন্দ্র দেওয়ালির আগে পেট্রলে পাঁচ ও ডিজেলে ১০ টাকা এক্সাইজ কমিয়েছিল। ফলে স্রেফ পাটিগণিতের নিয়মে রাজ্যের কর কমেছিল পেট্রলে ৮২ পয়সা ও ডিজেলে ১.৭৭ টাকা। কেন্দ্র যদি ফের শুল্ক কমায়, তাহলে রাজ্যের করও কমবে। রেহাই পাবেন সাধারণ মানুষ। আমরাও বাঁচব।’
প্রশ্ন কিন্তু দাম কমানোর ক্ষেত্রে কেন্দ্রের সদিচ্ছা নিয়েই। মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার সময় ব্যারেল পিছু তেলের দর ছিল ১১৫ ডলার। তখন ভারতে পেট্রল ছিল লিটার পিছু ৭৯.২৬ টাকা। এখন আন্তর্জাতিক বাজারে সেই দর ২০১৪ সালের তুলনায় কম। অথচ ১০০ টাকার অনেক বেশি দাম পেট্রলের। বিরোধীদের অভিযোগ, শুল্ক বাড়িয়ে মুনাফা লুটছে কেন্দ্র। আর তার চরম দাম চোকাতে হচ্ছে দেশবাসীকে।