মাওবাদী কিষেনজির সহযোগী যাদবপুরের প্রাক্তনী! গ্রেপ্তার নদীয়ার জয়িতা
মাওবাদীদের শীর্ষনেতা কিষেনজির সহযোগী জয়িতা দাসকে গ্রেপ্তার করল কলকাতা পুলিসের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। নদীয়ার জাগুলিয়া থেকে মঙ্গলবার রাতে তাঁকে পাকড়াও করা হয়। এই মাও নেত্রীর বিরুদ্ধে দুই ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম ও নদীয়া জেলায় মাওবাদী কার্যকলাপ চালানোর অভিযোগ রয়েছে। সেই সঙ্গে মহিলাদের মধ্যে সরকার বিরোধী প্রচার চালিয়ে তাঁদের দলে টানার চেষ্টা করছিলেন বলেও অভিযোগ। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা রুজু করা হয়েছে। বুধবার তাঁকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়। প্রসঙ্গত ২০১৩ সালের আগাস্ট মাসে তিনি এসটিএফের হাতে ধরা পড়েছিলেন।
কয়েকদিন আগে ময়দান থানা এলাকা থেকে একটি পরিত্যক্ত ব্যাগ উদ্ধার করে এসটিএফ। তার থেকে উদ্ধার হয় মাওবাদী লিফলেট ,পুস্তিকা ও পেন ড্রাইভ। এসটিএফ একটি মামলা রুজু করে। তদন্তে জানা যায়, কলকাতায় মাওবাদীদের বিভিন্ন শাখা সংগঠন তৎপর হয়ে উঠেছে। কৃষক, ছাত্র-ছাত্রী ও মহিলারা তাদের টার্গেট। পিছন থেকে গোটা বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করছে জয়িতা দাস।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রাক্তনীর গতিবিধি সম্পর্কে খোঁজখবর শুরু হয়। জানা যায়, নদীয়া-মুর্শিবাদের বিভিন্ন গ্রামে তিনি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সেখানে বসে মগজ ধোলাই করছেন গ্রামবাসীদের। জানা যায়, মুর্শিদাবাদের নওদা থানা এলাকায় প্রতীক ভৌমিক ও হাসিবুর শেখ মাওবাদীদের ফ্রন্টাল অরগানাইজেশন সংগ্রামী কৃষক সমিতির হয়ে কাজ করছেন। তাঁরা জয়িতার অনুগামী বলে পরিচিত। গ্রেপ্তারের পর দু’জনের কাছ থেকে উদ্ধার হয় আগ্নেয়াস্ত্র-গুলি। মেলে মাওবাদী পুস্তিকাও।
তাঁদের জেরা করে জানা যায়, মুর্শিদাবাদে আসছেন মাওবাদী নেত্রী জয়িতা দাস। ধৃত দুজনের মোবাইলের কল লিস্ট ঘেঁটে দেখা যায় জয়িতার সঙ্গে তাঁরা একাধিকবার কথা বলেছেন। এরপরই এসটিএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিস। এসটিএফের অফিসাররা দেখেন, কলকাতায় উদ্ধার হওয়া লিফলেটের সঙ্গে নওদাতে উদ্ধার হওয়া লিফলেটের হুবহু মিল রয়েছে। এমনকী উদ্ধার হওয়া চিঠির হাতে লেখাও মিলছে। মাওবাদী শাখা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ওই দু’জন পুলিসকে জানান এগুলি জয়িতা দাসের তৈরি করা। জয়িতা এখন জাগুলিয়া এলাকায় গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছেন। নির্দিষ্ট খবর পেয়ে স্থানীয় পুলিস তাঁকে থানায় নিয়ে আসে। এসটিএফকে খবর দেওয়া হয়। রাত দশটা নাগাদ গ্রেপ্তার করা হয় জয়িতাকে। মাতঙ্গিনী মহিলা সমিতির এই প্রাক্তন নেত্রী এখন কাজ করছেন পড়ুয়া ও মহিলাদের মধ্যে। সরকারের বিভিন্ন কল্যাণমূলক প্রকল্প নিয়ে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন। গোটা রাজ্য জুড়ে অশান্তি ও নাশকতার ছক কষছিলেন জয়িতা।