পর্যটক টানতে পাখিকেই ‘পাখির চোখ’ করছেন উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ীরা
উত্তরবঙ্গ মানেই জঙ্গল আর পাহাড়, এতদিন এই জেনে এসেছেন পর্যটকেরা। কিন্তু এবার ছক ভাঙছে উত্তরবঙ্গের পর্যটন, পর্যটন ব্যবসায়ী, এবং পরিবেশকর্মীরাই এই প্রথা ভাঙার পথিকৃৎ। পাহাড় ও জঙ্গলের আকর্ষণের সঙ্গে থাকবে উত্তরবঙ্গের নিজস্ব ফ্যানবেস। নতুন করে পাখি পর্যটনের ঠিকানা হয়ে উঠবে উত্তরবঙ্গ।
কী এই বার্ড পর্যটন?
উত্তরবঙ্গের সমতল ও পাহাড়; দুই জায়গাতেই স্থানীয় ও পরিযায়ী পাখির দেখা মেলে, পাখির এই বৈচিত্রকে ভিত্তি করেই উত্তরের পর্যটন শিল্পকে নতুন আঙ্গিক দিতে চাইছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। গজলডোবা, লাটপাঞ্চারের সঙ্গেই লাটাগুড়ি থেকে আলগারা যাওয়ার রাস্তায় এবং লাটাগুড়ি থেকে চালসা যাওয়ার রাস্তায় একশোর বেশি প্রজাতির পাখি দেখা যায়। উত্তরবঙ্গের এত প্রজাতির পাখির সম্ভার যাতে পর্যটকদের মন জয় করতে পারে, সেকারণে বার্ড ট্যুরিজমের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
বাংলায় প্রায় সাড়ে আটশো রকমের পাখি দেখা যায়। তার মধ্যে কেবল উত্তরবঙ্গেই সাড়ে ছয়শোর বেশি প্রজাতির পাখির দেখা মেলে। এই পাখির বৈচিত্রের কারণেই পর্যটক ও ওয়াইল্ডলাইফ ফোটোগ্রাফারেরা ভিড় জমান উত্তরবঙ্গে। সুলতান টিট, স্পট উইঙ্গড স্টার্লিং, লং টেইল ব্রডবিল, রুফস নেক্ড হর্নবিল, রেড হেডেড ট্রগন, মাউন্টেন ইম্পেরিয়াল পিজিয়নের মতো পাখিদের দেখা মেলে উত্তরবঙ্গে।
উত্তরের এই পাখি বৈচিত্রকে পর্যটকদের কাছে তুলে ধরার জন্য দার্জিলিং বন্যপ্রাণ বিভাগের সহযোগিতায় ন্যাফের তরফে সম্প্রতি লাটপাঞ্চারে একটি শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই বিভিন্ন প্রজাতির পাখি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ন্যাফের কর্নধার অনিমেষ বসু বলেন, ‘উত্তরবঙ্গে যেমন পাখির বৈচিত্র রয়েছে, তা বিশ্বের অন্য কোথাও দেখতে পাওয়া যায় না। আগ্রহী পর্যটকেরা এখানে এলে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখতে পাবেন।’
উত্তরবঙ্গের পাখি ও প্রজাপতির বৈচিত্রকে ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় করে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। নানান ধরণের পাখি কর্মশালা, পাখি পর্যবেক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হচ্ছে। বার্ড টুরিজম যে পর্যটন ব্যবসায় নতুন দিশা হয়ে দেখা দিচ্ছে; তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন পর্যটন বিশেষজ্ঞ রাজ বসু। তিনি জানিয়েছেন, “যে এলাকাগুলো পাখি দেখার জন্য বিখ্যাত, ইতিমধ্যেই সেখানকার স্থানীয়দের এব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।”