রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

দেউচা পাচামিতে বড়সড় হামলার ষড়যন্ত্র! ধৃত মাওবাদী নেতা

April 1, 2022 | 2 min read

রাজ্যের সর্ববৃহৎ কয়লা খনি প্রকল্প। বীরভূমের দেউচা-পাচামিতে। সাধারণ আদিবাসীদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিয়েই প্রকল্প বাস্তবায়নে উদ্যোগী রাজ্য সরকার। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, জোর করে জমি নেওয়া হবে না। তা সত্ত্বেও প্রকল্পটি ভেস্তে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে মাওবাদীরা। আদিবাসীদের ভিড়ে মিশে শুধু খনি বিরোধী আন্দোলনে মদতই নয়, বড়সড় নাশকতার ছক কষা হয়েছে। গত কয়েকদিনে ধৃত তিন মাওবাদী নেতা-নেত্রী গ্রেপ্তার হতেই সামনে এল সেই ষড়যন্ত্র। ল্যান্ডমাইন থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, সব কিছুই ব্যবহারের পরিকল্পনা ছিল মাওবাদীদের। ছিল পুলিসকে আক্রমণের ছকও। মুর্শিদাবাদের নওদাতে ধরা পড়া মাওবাদীদের ফ্রন্টাল অর্গানাইজেশনের নেতা প্রতীক ভৌমিককে জেরা করে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে এসেছে গোয়েন্দাদের। এছাড়া নদীয়া, মুর্শিদাবাদ সহ বিভিন্ন জেলায় উন্নয়নমূলক প্রকল্পের জন্য জমি চিহ্নিতকরণের জন্য কাজ শুরু করেছে রাজ্য সরকার। সেখানেও গ্রামবাসীদের ভুল বুঝিয়ে মাওবাদী সংগঠনগুলির বড় মাথারা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও গোয়েন্দা সূত্রে খবর।

গত মার্চ মাসের ২৪ তারিখ নওদা থেকে গ্রেপ্তার হন প্রতীক ভৌমিক। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয় আগ্নেয়াস্ত্র। গোয়েন্দাদের জালে ধরা পড়েন তাঁর নিরাপত্তারক্ষী হাসিবুর শেখও। এরপর তদন্ত যত এগিয়েছে, ততই প্রতীকের সম্পর্কে চমকে দেওয়ার মতো তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। জানা গিয়েছে, মাওবাদী নেত্রী জয়িতা দাসের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির মাধ্যমে সংগঠনে হাতেখড়ি তাঁর। সেই সূত্র ধরে প্রতীক হাজির হয়েছিল মাওবাদীদের অন্যতম শীর্ষ নেতা অরুণকুমার ভট্টাচার্য ওরফে কাঞ্চনদার সামনে। উল্লেখ্য, কয়েকমাস আগে অসমে পুলিসের হাতে ধরা পড়েছেন কাঞ্চনদা। যদিও প্রতীক যখন তাঁর কাছে যায়, তখনও তিনি সক্রিয়। প্রথমে প্রতীককে ফ্রন্টাল অর্গানাইজেশনের হয়ে কাজ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে অসমে তাঁকে ডেকে পাঠান কাঞ্চনদা। প্রকাশ্যে আন্দোলনের পাশাপাশি আড়ালে তরুণ-তরুণীদের নিয়ে অপারেশনাল স্কোয়াড তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে মাইন এবং বিভিন্ন ইমপ্রোভাইজড বিস্ফোরক তৈরির প্রশিক্ষণও নেন তিনি।

রাজ্যে ফিরে এসে প্রতীক জোরকদমে মাওবাদীদের ফ্রন্টাল অর্গাইনেজশনের হয়ে প্রচার শুরু করে। এর সঙ্গেই চলতে থাকে অপারেশন স্কোয়াড তৈরির কাজ। বেশ কিছু ছেলেমেয়েকে তিনি ইতিমধ্যেই নিয়োগ করেছেন বলে খবর। প্রতীককে জেরা করে গোয়েন্দারা জানতে পারছেন, তাঁর মূল দায়িত্ব ছিল দেউচা-পাচামিতে আন্দোলনকারীদের ভিড়ে মিশে গিয়ে আন্দোলনকে অন্য মাত্রা দেওয়ার। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে জমি অধিগ্রহণ করতে আসা সরকারি আধিকারিকদের উপর হামলা চালানোর প্রস্তুতি নেন তিনি। এর সঙ্গেই ল্যান্ডমাইন পুঁতে বা গুলি চালিয়ে নাশকতার ষড়যন্ত্রও চলছিল। সেই কারণে আগ্নেয়াস্ত্র জোগাড় শুরু করেছিলেন অভিযুক্ত। সূত্রের খবর, এর জন্য ছত্তিশগড় ও বিহারে মাওবাদীদের অপারেশনাল স্কোয়াডের দায়িত্বে থাকা শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। সেখান থেকে আগ্নেয়াস্ত্র আসার কথা ছিল। প্রতীক ধরা পড়ে যাওয়ায় দেউচা-পাচামির আন্দোলনের দায়িত্বভার কার উপর বর্তেছে, এখন সেটাই জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Maoists, #Deucha Panchami

আরো দেখুন