দিল্লিতে তৃণমূলের পার্টি অফিসের জন্য বরাদ্দ জমি দখল, নিরুত্তাপ মোদী সরকার
খাস দেশের রাজধানীতেই তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিসের জন্য বরাদ্দ হওয়া জমি জবরদখল। এক-দুই নয়, দীর্ঘ আট বছর ধরে। জমিটি দখলমুক্ত করার কোনও উদ্যোগই নিচ্ছে না মোদি সরকার। আর তা নিয়ে এখন বিতর্ক তুঙ্গে। বর্তমানে এমপি সংখ্যার নিরিখে সংসদে তৃতীয় বৃহত্তম দল তৃণমূল। অথচ তাদেরই কোনও পার্টি অফিস বা জাতীয় সদর দপ্তর নেই দিল্লিতে। কমবেশি প্রতিটি আঞ্চলিক দলেরই রাজধানীতে সদর দপ্তর রয়েছে। তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পার্টির প্রতি এহেন বঞ্চনা কেন? শনিবার এই ইস্যুতে কেন্দ্রের দিকে আঙুল তুলেছে তৃণমূল। দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের অভিযোগ, ‘ইচ্ছাকৃতভাবেই বঞ্চনা। নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে বারংবার আবেদন নিবেদন করেও লাভ হচ্ছে না।’ বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের জনস্বার্থ বিরোধী নীতির লাগাতার প্রতিবাদে নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলার শাসক দল। সেই কারণেই কি বরাদ্দ হওয়া জমি পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে না? প্রশ্ন ডেরেকের।
পার্টি অফিস নির্মাণের জন্য দিল্লির দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গ সংলগ্ন বিভিন্ন জমি দেওয়া হয়েছিল প্রতিটি দলকে। সেই তালিকায় ছিল তৃণমূলও। তাদের নামে বরাদ্দ হয় ৪, দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গের প্লটটি। কিন্তু সেই জমিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল পার্টি অফিস গড়ে তুলতে পারেনি। কারণ, জবরদখল। তৃণমূলের বক্তব্য, দু’টি মন্দির, চায়ের দোকান, একঝাঁক দখলদার সেখানে দীর্ঘদিন ধরেই বসে আছে। তাদের সরাতে নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে বহুবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। শেষ আর্জি গিয়েছে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। আজ পর্যন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি। অথচ বরাদ্দ হওয়া জমি সম্পূর্ণ ফাঁকা অবস্থায় রাজনৈতিক দলের হাতে তুলে দেওয়ার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের। দিল্লি পুলিসও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে। কিন্তু মোদী সরকার কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না।
এপ্রসঙ্গে এদিন ক্ষোভ উগরে দেন ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনি বলেন, ‘নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে শিক্ষালাভ করেছি। মাথা উঁচু করে রাজনীতি করব। সরকারের থেকে কোনও সাহায্য চাইছি না। সর্বভারতীয় স্বীকৃত দল হিসেবে যেটা আমাদের প্রাপ্য, সেটুকুও কেন দেওয়া হবে না? এই জমি আমাদের জন্য বরাদ্দ। তাহলে কতবার আবেদন নিবেদন করব?’ উল্লেখ্য, লোকসভা ও রাজ্যসভা মিলিয়ে বর্তমানে বিজেপির এমপির সংখ্যা ৩৮৯। কংগ্রেসের ৮৬। তৃণমূলের ৩৫। ডিএমকের ৩৪। এদিনই দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে ডিএমকের পার্টি অফিস উদ্বোধন করেছেন দলের সুপ্রিমো এম কে স্ট্যালিন। সেখানে হাজির ছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী সহ অন্যান্য কয়েকটি আঞ্চলিক দলের প্রতিনিধি। সেখানেই ফের উঠে আসে এই বিতর্ক।