‘হয় পদক্ষেপ নিন বা ইউএন ভেঙে দিন’ রাষ্ট্রসঙ্ঘে গর্জে উঠলেন জেলেনস্কি
জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (দায়েশ)-এর সঙ্গে রাশিয়ার তুলনা টানলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এই আবহে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলে নিউরেমবার্গের (দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময়কালে ঘটা অপরাধের বিচার) মতো একটি বিচার চাইলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। এদিন রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তি পরিষদে ভার্চুয়াল সভায় জেলেনস্কি কড়া ভাষায় তোপ দাগেন রাষ্ট্রসংঘকেও। তিনি বলেন, ‘সংস্কার বাস্তাবায়িত করে পদক্ষেপ করুন নয়ত রাষ্ট্রসংঘ ভেঙে দিন।’ নিরাপত্তা পরিষদ থেকে তিনি রাশিয়ার অপসারণের দাবি তোলেন।
তিনি রাষ্ট্রসংঘকে বলেন, ইউক্রেনের নাগরিকদের ট্যাঙ্কে পিষ্ট করা হয়েছে, নারীদের ধর্ষণ করা হয়েছে এবং তাদের সন্তানদের সামনে মায়েদের হত্যা করা হয়েছে। তিনি বুচার ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, বুচায় রাশিয়ান সেনাবাহিনী যা করেছে তা বর্বরতা। এদিকে বুচার ঘটনায় রাশিয়ার হাত নেই বলে ক্রেমলিন দাবি করে আসছে। তবে এই ঘটনার ছবি যত সামনে আসছে, ততই এটা বিভীষিকায় পরিণত হচ্ছে। উল্লেখ্য, কিয়েভ প্রশাসনিক এলাকার মধ্যে বুচা নামক শহরে বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে গণকবর থেকে মৃতদেহ উদ্ধার হচ্ছে। সেই শহরে রাস্তার ধারে মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে লাইন দিয়ে। অনেক ক্ষেত্রেই মৃতদেহের হাত পিছন থেকে বাঁধা। মাথায় পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে করা হয়েছে গুলি।
এই আহবে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি প্রশ্ন তুলেছেন যে, রাষ্ট্রসংঘের ইউক্রেনকে যে নিরাপত্তা দেওয়া উচিত, তা কোথায়? জেলেনস্কি দাবি করেন, রাশিয়ার কর্মকাণ্ডের ফলে ইউক্রেনে জঘন্য যুদ্ধাপরাধ হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ইউক্রেনে। জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন যে রাশিয়া ইউক্রেনকে ‘নিরব দাস’-এ পরিণত করতে চায় এবং বলেছেন যে রাশিয়াকে তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহি করতে হবে।
জেলেনস্কি এদিন আরও বলেন যে রাশিয়ান সৈন্যদের কর্মকাণ্ড সন্ত্রাসীদের থেকে কোনও অংশে আলাদা নয়। জেলেনস্কি বলেন, রুশ সৈন্যরা জাতিগত ও ধর্মীয় বৈচিত্র্য ধ্বংস করার নীতি অনুসরণ করে, তারপর যুদ্ধে উসকানি দেয় এবং অনেক সাধারণ মানুষকে খুন করে। তাদের কাউকে রাস্তায় খুন করা হয়, কাউকে কুয়োতে ফেলে দেওয়া হয়। এমনকি মানুষের বাড়িতে ঢুকেও তাদের খুন করা হয় এবং বাড়িঘরে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।