ডাহা ফেল মোদীর রেল, ট্রেন লেট হওয়ার কথা উঠে এল ক্যাগ রিপোর্টে
সময়ানুবর্তিতার নিরিখে মোদী জমানায় ডাহা ফেল ভারতীয় রেল। ট্রেনের গড় গতি সামান্য বাড়লেও ‘লেট’ হওয়ার প্রবণতা এবং সার্বিক সময়ানুবর্তিতা, দুই ক্ষেত্রেই গত কয়েক বছরে ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে ভারতীয় রেল। সংসদে এই রিপোর্ট পেশ করেছে Comptroller and Auditor General বা ক্যাগ।
ক্যাগের পেশ করা রিপোর্ট বলছে, অন্যান্য দেশের তুলনায় সময়ে পৌঁছানো নিয়ে কড়াকড়ি অনেক কম হওয়া সত্ত্বেও এই মাপকাঠিতে আগের থেকে গত কয়েক বছরে অনেক পিছিয়ে গিয়েছে ভারতীয় রেল (Indian Rail)। ২০১২-১৩ সালে ভারতে কমবেশি ৭৯ শতাংশ ট্রেন সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাত। সেটা ২০১৮-১৯ সালে কমে হয়েছে ৬৯.২৩ শতাংশ। অর্থাৎ ৬ বছরে ভারতীয় রেলের সময়ানুবর্তিতা কমেছে প্রায় ১০ শতাংশ। তাও এই হিসাব শুধু প্রান্তিক স্টেশনের ক্ষেত্রে। মাঝের স্টেশনগুলিতে ট্রেন পৌঁছানোর সময় হিসাব করলে সেটা আরও কমে যাবে। মজার কথা হল, ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ের ১৫ মিনিট পর পর্যন্ত স্টেশনে পৌঁছালেও সেটিকে ‘লেট’ বলে গণ্যই করা হয় না ভারতে।
CAG রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০৮ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত রেললাইনের আধুনিকিকরণ এবং রক্ষণাবেক্ষণে ভারত সরকার প্রায় আড়াই লক্ষ কোটি টাকা খরচ করেছে। ২০১৬-১৭ সালে ‘মিশন রফতার’ নামে আলাদা একটা কর্মসূচিও নেওয়া হয়। কিন্তু কোনও কিছুতেই কাজের কাজ হয়নি। ‘মিশন রফতার’-এ ট্রেনের গতির যে লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল, তার ধারেকাছে পৌঁছাতে পারেনি রেল। ২০২১-২২ সালের মধ্যে এক্সপ্রেস এবং মেল ট্রেনের ক্ষেত্রে ঘণ্টায় ৫০ কিমি এবং ঘণ্টায় ৭৫ কিলোমিটার গতিবেগে ছোটার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। ৪৭৮টি সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের মধ্যে ১২৩টিই ঘণ্টায় ৫৫ কিলোমিটার গতির লক্ষ্যমাত্রার থেকে ধীর গতিতে চলছে। CAG’র রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, যে যে ফ্যাক্টরের জন্য রেল এভাবে গতিহীন হচ্ছে, তার মধ্যে অন্তত ছ’টিই নিয়ন্ত্রণযোগ্য। অর্থাৎ সরকার চাইলেই এই বাধাগুলি নিয়ন্ত্রণ করা যেত। রেলে গতি বাড়ানো যেত। কিন্তু গাফিলতির জন্য করা হয়নি বলেই অভিযোগ।
প্রশ্ন হচ্ছে, প্রতি বছর রেলের সংস্কারের নামে যে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে, তার সুফল কোথায়? আর রেলের যখন এই বেহাল দশা, তখন বুলেট ট্রেন (Bullet Train) বা সুপারফাস্ট ট্রেন চালানোর চেষ্টা, ছেঁড়া কাথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখার মতো নয় তো?