করোনার ঠেলায় ব্যবসায় মন্দা, হালখাতায় ‘অগ্রীম’ এর ‘রেট’ বেঁধে দিলেন ব্যবসায়ীরা
করোনার কারণে গত দু’বছরে ব্যবসার হাল বেশ খারাপ। বিশেষ করে ছোট ব্যবসায়ীদের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে গত দু’বছরে। এই পরিস্থিতি আবার একটি নতুন বছরের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আমরা। আর নতুন বছর মানেই ছোট ব্যবসায়ীদের কাছে এবং ক্রেতাদের কাছেও, সেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। কারণ এই সময়েই হয় হালখাতা।
ব্যবসায়ী, বিক্রেতা, দোকানদারের কাছে কিছু টাকা অগ্রীম জমা রেখে খাতা খুলে যান ক্রেতারা। আর সেটিই হালখাতার প্রধান রীতি। কিন্তু গত দু’বছরে ক্রেতা-বিক্রেতা— দু’শ্রেণির মানুষেরই অবস্থা খারাপ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে হালখাতার জন্য কেমন নিয়ং মেনে চলছেন ছোট ব্যবসায়ীরা।
কলকাতা বা হাওড়ার বেশির ভাগ ছোট ব্যবসায়ীর কাছে জিজ্ঞাসা করে হলে, তাঁরা বলছেন, পরিস্থিতি মোটেও সুবিধার নয়।
দমদম এলাকায় ছোট মুদিখানার দোকান প্রবীর সাহার। প্রবীরবাবুর কথায়, বাজারে লক্ষ-লক্ষ টাকা বাকি পড়ে আছে। সকলের অবস্থা খারাপ। এই অবস্থায় কারও থেকেই টাকা চাওয়া যাচ্ছে না। তাই এ বছর হালখাতার ক্ষেত্রেও কিছু নিয়ম মেনে চলতেই হচ্ছে। গড়িয়া এলাকায় মিষ্টি দোকান চালান অরবিন্দ ঘোষ। তিনি বলছেন, ‘কেউ হালখাতা করতে এলে, তাঁকে মিষ্টির বাক্স দিতেই হয়। তাতেও তো মোটা টাকা খরচ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত যত টাকা দিয়ে তিনি হালখাতা করলেন, দেখা গেল, তাঁকে তার চেয়ে বেশি টাকার উপহার দিতে হল। এমন হলে খুব সমস্যার।’
মিষ্টির বাক্স, ক্যালেন্ডার মিলিয়ে মোটের উপর এক এক জন ক্রেতার জন্য প্রায় শ’তিনেক টাকা খরচ হয়েই যায়। তেমনই বলছেন ব্যবসায়ীরা। আর তাই বেশির ভাগ ছোট ব্যবসায়ী এবার হালখাতার ন্যূনতম পরিমাণ রেখেছেন ৫০০ টাকা।
তবে আরও শর্ত আছে। যাঁদের ইতিমধ্যেই দোকানে প্রচুর ধার, তাঁদের হালখাতা করতে এলে কোনও উপহার না দেওয়ার কথাও ভাবছেন কেউ কেউ। অর্থাৎ মিষ্টির বাক্স আর ক্যালেন্ডার হাতে বাড়ি ফিরতে পারবেন তাঁরাই, যাঁদের ওই দোকানে কোনও ধার নেই।
মোটের উপর এভাবেই আবার ব্যবসায় ফিরতে চাইছেন ব্যবসায়ীরা। সকলেই চাইছেন, হালখাতায় তাঁদের ব্যবসা একটু ভালো হোক। এটি যেন তাঁদের আরও বেশি করে অর্থকষ্টে ডুবিয়ে না দেয়।