পাক রাজনীতির ডামাডোলে ঠিক কতোটা উপকৃত ভারত?
রাতারাতি পড়শি রাষ্ট্র পাকিস্তানের (Pakistan) বড়সড় রাজনৈতিক পালাবদল ঘটেছে। বদলে গিয়েছে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী। এই রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রভাব কি পড়বে দু’দেশের সম্পর্কে? শান্তি ফিরবে সীমান্তে নাকি ফের একবার কাশ্মীরের (Kashmir) অধিকার নিয়ে বাঁধবে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ? কী বলছে ওয়াকিবহাল মহল?
ভারত-পাকিস্তানের (India-Pakistan Relationship) সম্পর্কে বরাবরই অম্লমধুর। স্বাধীনতার ৭৫ বছরের মধ্যে তিন-তিনবার যুদ্ধে জড়িয়েছে দুই দেশ। তার মধ্যে কাশ্মীর নিয়েই বেঁধেছে পরপর দু’টি যুদ্ধ। এছাড়া তো সীমান্তে গুলিগোলা, পাক মদতে এদেশে জঙ্গি হামলার মতো বিষয়গুলি রয়েইছে। তাই সীমান্তপারে নেতৃত্বের পালাবদল ঘটলে ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকে ভারত। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়।
সদ্য প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (Pakistan PM Imran Khan) বরাবরই ভারতবিরোধী। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) কট্টর সমালোচক তিনি। যদিও প্রধামন্ত্রিত্বের শেষ পর্যায়ে এসে ভারতের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিলেন তিনি। এবার শাহবাজ শরিফ (Shahbaz Sharif) প্রধানমন্ত্রীর কুরসিতে বসে কি ভারত বিদ্বেষের পথেই হাঁটবেন তিনি? প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
সম্প্রতি পাক সেনা প্রধান কামর জাভেদ বাজওয়া জানিয়েছিলেন, ভারত রাজি থাকলে কাশ্মীর নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে চায় পাকিস্তান। কিন্তু ইমরান খান সেই সময় ভারত বিরোধিতার পথে এগিয়েছিলেন। তবে পাকিস্তানের বিদেশনীতি বরাবরই সেনার নিয়ন্ত্রণাধীন। শরিফ ক্ষমতায় এসে বাজওয়াকে যে চটাতে চাইবেন না সেটাও পরিষ্কার। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানে পালাবদলে লাভই হবে ভারতের। কাশ্মীরে সংঘর্ষবিরতি পথে হাঁটতে পারে ইসলামাবাদ। তাঁদের মতে, শরিফ ভারত-পাকিস্তানের গঠনমূলক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে জোর দিতে চাইবেন। যা আখেরে ভারতের লাভই হবে।
ভারতের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ করণ থাপার যিনি ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উপর নজর রেখেছেন, এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কাশ্মীরে সংঘর্ষবিরতি ঘোষণার জন্য পাক সেনা নয়া সরকারের উপর চাপ তৈরি করতে পারে।”
তবে চিন্তা একটা থেকেই যাচ্ছে। ইমরান প্রথম থেকেই আমেরিকাবিরোধী ছিলেন। প্রকাশ্যেই মার্কিন শাসনের নিন্দা করেছেন। এমনকী, নিজের ক্ষমতাচ্যুতির দায়ও চাপিয়েছেন ওয়াশিংটনের উপর। প্রথম চিন এবং পরে রাশিয়া ঘনিষ্ঠতার পথে হেঁটেছেন ইমরান। কিন্তু পাক সেনা ইমরানের এই অবস্থানের ঘোরবিরোধী। শরিফও স্বাভাবিকভাবে আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নতির চেষ্টা করবে। এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে তুলনামূলকভাবে মস্কোর দিকে ঝুঁকে রয়েছে ভারত। যা আমেরিকার একেবারেই নাপসন্দ। এনিয়ে ভারতকে সতর্কও করেছে তারা। এমন অবস্থায় পড়শি পাকিস্তান সম্পর্কের উন্নতি ঘটিয়ে আমেরিকাপন্থী হয়ে পড়লে পরোক্ষে নয়াদিল্লির উপরই চাপ বাড়বে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তবে চিন নির্ভরতা কাটিয়ে আমেরিকপন্থী হওয়া ইসলামাবাদের (Islamabad) ক্ষেত্রেও সহজ হবে না বলেই দাবি।