বাংলা শস্য বিমা প্রকল্প এবার আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর! উদ্যোগে রাজ্য সরকার
এখন শস্য বিমায় ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় পরীক্ষামূলক ফসল কাটা বা ক্রপ কাটিং এক্সপেরিমেন্ট (সিসিই)-এর ভিত্তিতে।
বাংলা শস্য বিমা প্রকল্প এবার আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর হচ্ছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, শস্য বিমায় ক্ষতিপূরণের পরিমাণ নির্ধারণে দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর সাহায্য নেওয়া হবে। ইসরোর রিমোট সেন্সিং স্যাটেলাইট বা দূর সঞ্চার উপগ্ৰহের মাধ্যমে নেওয়া ছবি ব্যবহার করে শস্য বিমা প্রকল্পে কৃষকের ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হবে। সম্প্রতি নবান্নে কৃষি দপ্তরের শীর্ষ আধিকারিকদের বৈঠকে এব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত এগ্ৰিকালচার ইনসিওরেন্স কোম্পানির আধিকারিকরাও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই বৈঠকে যোগ দেন। এই সংস্থাটি রাজ্য শস্য বিমা প্রকল্পে যুক্ত আছে।
আরও ঠিক হয়েছে, ক্ষতিপূরণ নির্ধারণে রাজ্য কৃষি দপ্তরের আবহাওয়াগত তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যবহার করা হবে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় কৃষি দপ্তরের প্রায় ২০০টি আবহাওয়া কেন্দ্র আছে। এই কেন্দ্রগুলিতে প্রতিদিন বৃষ্টি, তাপমাত্রা প্রভৃতি রেকর্ড করা হয়। অতিরিক্ত বৃষ্টিতে বন্যা বা অনাবৃষ্টিতে খরার জন্য ফসলের ক্ষতি হলেও শস্য বিমায় ক্ষতিপূরণ মেলে। তাই ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোন এলাকায় কতটা বৃষ্টি হয়েছে বা হয়নি, সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এখন শস্য বিমায় ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় পরীক্ষামূলক ফসল কাটা বা ক্রপ কাটিং এক্সপেরিমেন্ট (সিসিই)-এর ভিত্তিতে। ফসল অনুযায়ী গ্ৰাম পঞ্চায়েত বা ব্লক ভিত্তিতে নির্দিষ্ট সংখ্যক সিসিই করা হয়। এর মাধ্যমে ওই এলাকায় সেই ফসলের স্বাভাবিক উৎপাদনের থেকে কতটা কম হয়েছে, তা দেখা হয়। তার ভিত্তিতে ওই এলাকায় নির্দিষ্ট ফসলটিতে কৃষক শস্য বিমা প্রকল্পে কতটা ক্ষতিপূরণ পাবেন, তা ঠিক হয়। কিন্তু এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে সময় লাগে। ফলে বিমার ক্ষতিপূরণ পেতে অনেক দেরি হয়ে যায়। মাঠে গিয়ে ফসল কেটে তার রিপোর্ট পাঠাতে হয়। অনেক সময় ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে যে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়, তা নিয়ে অসন্তোষ দেখা দেয়। এবার ইসরোর বিশেষ উপগ্ৰহ নির্দিষ্ট এলাকায় ফসলের কতটা ক্ষতি হয়েছে, তার ছবি তুলে পাঠাবে। ফসলের অবস্থার গ্রামভিত্তিক ছবি তোলার ব্যবস্থাও এতে আছে। এভাবে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে সুবিধা হবে বলে সরকারি কর্তারা মনে করছেন। শস্য বিমায় ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য ইসরো এই ধরনের কাজ হরিয়ানা ও পাঞ্জাবেও করেছে।