হবে না রথ যাত্রা, কিন্তু মঙ্গলে খুলবে তারাপীঠ
দীর্ঘ ৯৩ দিন পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী মঙ্গলবার রথযাত্রার দিনই খুলে যাচ্ছে তারাপীঠ মন্দির। শনিবার বৈঠকে বসে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্দির কমিটি। তবে, মন্দির খুললেও এবার মায়ের ব্যতিক্রমী রথযাত্রা হবে না। হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে যাতে সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে তাই তারামায়ের রথযাত্রা স্থগিত রাখা হচ্ছে। পরিবর্তে মায়ের প্রতিকৃতি রথে চাপিয়ে বিশেষ পুজো করা হবে।
করোনা সংক্রমণ রোধে প্রশাসনের পরামর্শ মেনে গত ২০ মার্চ বন্ধ হয়ে যায় তারাপীঠ মন্দির। দীর্ঘ লকডাউনের পর ৩০ মে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান খোলার ক্ষেত্রে ছাড় দেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর দু’বার মন্দির খোলার সম্ভাবনা তৈরি হলেও সেখান থেকে সরে আসে কমিটি। অবশেষে শনিবার দুপুরে ফের বৈঠকে বসেন সেবাইতরা। সেখানেই সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়, রথযাত্রার দিন সাধারণের জন্য মন্দির খুলে দেওয়া হবে। তবে, মায়ের রথযাত্রা এবারের মতো স্থগিত থাকবে।
মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, মন্দিরকে কেন্দ্র করে যাঁদের রুজি-রোজগার চলে, তাঁরা বর্তমানে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। ভক্তদেরও মন্দির খোলা নিয়ে চাপ ছিল। তাই সকল সেবাইত বৈঠকে বসে রথের দিন মন্দির খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে, ভক্ত ও সেবাইতদের সুরক্ষার কথা ভেবে আপাতত কিছুদিন গর্ভগৃহে পুণ্যার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকছে। গর্ভগৃহের বাইরে থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সকলেই যাতে মায়ের দর্শন পান সেই ব্যবস্থা রাখা হবে। সেখানেই মায়ের পিতলের চরণ থাকবে। সেবাইতরা ভক্তদের পুজোর ডালা মায়ের কাছে নিবেদন করে নিয়ে এসে মন্দির চত্বরের নির্দিষ্ট জায়গায় বসিয়ে অঞ্জলি পাঠ করাবেন ও প্রসাদ তুলে দেবেন। তবে, মাস্ক ছাড়া মন্দিরে প্রবেশ নিষিদ্ধ। সকলকে স্যানিটাইজার টানেল দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। এছাড়া পুজোর উপকরণের দোকানগুলিতেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে।
মন্দির খুললেও এবার রথযাত্রা স্থগিত থাকছে। কমিটির সদস্যরা জানান, মায়ের ব্যতিক্রমী রথযাত্রা দেখতে হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমান। তাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা খুবই কঠিন। তাই সংক্রমণ রোধে রথযাত্রা বন্ধ রাখা হচ্ছে। সেবাইতরা বলেন, ওইদিন বিকেলে মন্দিরের কাছে রথ এনে মায়ের প্রতিকৃতি চাপিয়ে বিশেষ পুজো করা হবে। তবে, রথের চাকা গড়াবে না। উল্টোরথেও একই নিয়ম বজায় থাকবে। এছাড়া ভক্তরা ভাণ্ডারা দিতে পারবেন। তবে, তা সামাজিক দূরত্ব বিধি বজায় রেখে শ্মশানে খাওয়াতে হবে। মন্দির চত্বরে বসে কেউ ভোগ খেতে পারবেন না।
এদিন মন্দির খোলার সিদ্ধান্তে খুশি লজ অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের সভাপতি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ছাড় দেওয়ার পরই সুরক্ষার সমস্তরকম বন্দোবস্ত করে হোটেলগুলি খুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, মন্দির বন্ধ থাকায় পুণ্যার্থী সমাগম ছিল না। এবার মন্দির খুলে যাচ্ছে। ভক্তরাও আসতে শুরু করবেন। অনেকে অনলাইনে বুকিংও শুরু করে দিয়েছেন।