নাবালিকার সম্মতি থাকলেও যৌন সম্পর্ক ধর্ষণই, হাঁসখালিতে বললেন মহুয়া
“১৮ অনুর্ধ্বর সঙ্গে সম্মতিক্রমে যৌন সম্পর্ক স্থাপন হলেও তা আইনের চোখে ধর্ষণ”, এবার হাঁসখালির নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে এই মন্তব্য করলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ তিনি নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মহুয়া বলেন, “অত্যন্ত ধিক্কারজনক ঘটনা। নাবালিকার মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এক্ষেত্রে তার রাজনৈতিক পরিচিতি জরুরি নয়। আমাদের সরকার যা যা পদক্ষেপ করার করছে। ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি এক্ষেত্রে গ্রহণ করা হয়েছে।”
এদিন এই তৃণমূল সাংসদ আরও বলেন, “পকসো আইন মোতাবেক মামলা রুজু হয়েছে। এক্ষেত্রে একটি বিষয় বলা প্রয়োজন নাবাবালিকার সম্মতিতেও যদি যৌন সম্পর্ক হয় সেক্ষেত্রে তা বেআইনি। পকসো আইন মোতাবেক পদক্ষেপ করা হবে।”
মহুয়া মৈত্রের এই মন্তব্য অত্যন্ত ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। সোমবার হাঁসখালিতে নাবালিকাকে নিগ্রহের প্রসঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ”বিষয়টি খুন নাকি ধর্ষণ নাকি লাভ অ্যাফেয়ার তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। গত ৫ তারিখে ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি জানানো হচ্ছে ১০ তারিখে। কেন? দেহ সৎকার হল কেন? তাহলে তো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া সম্ভব নয়। এটা কি উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh) যে আমরা লাভ জেহাদ (Love Jihad) নিয়ে আলোচনা বসাব? এটা বাংলা। গ্রেফতার করা হয়েছে। কোনওরকম রং না দেখেই গ্রেফতার করা হয়েছে।”
তাঁর সংযোজন ছিল, ”কারও বাবা-দাদা যদি তৃণমূল করে আর সেই ছেলে যদি প্রেম করে তাহলে কার কী করার আছে! বাংলার রাজ্যটায় সবাই তৃণমূল। কী করবেন বলুন! তৃণমূলকে টানবার কী দরকার? তৃণমূল শুনলেই চোখে সরষে ফুল দেখছে।”
উল্লেখ্য, হাঁসখালিতে এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে স্থানীয় প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার ছেলের বিরুদ্ধে। প্রমাণ লোপাটের জন্য তার মৃত্যুর পর দেহ ময়নাতদন্ত না করেই পুড়িয়ে ফেলা হয় বলে ওঠে অভিযোগ। এই ঘটনায় রাজ্যজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। চাইল্ড লাইনের সাহায্যে নদিয়ার হাঁসখালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে নির্যাতিতার পরিবার। ইতিমধ্যেই মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কাউকেই রেয়াত করা হবে না, স্পষ্ট জানিয়েছেন মহুয়া।
এদিন হাঁসখালির নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন মহিলা ও শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী।