২৮ মাসে উত্তরবঙ্গের ৩০টি বন্ধ চা বাগান খুলে চমক রাজ্যের

শ্রমদপ্তর ও উত্তরবঙ্গ প্রশাসনের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, শুধু ৩০ হাজার শ্রমিক নয়, এই ৩০টি চা বাগান খুলে যাওয়ায় পরোক্ষে আরও লক্ষাধিক মানুষের রুটি-রুজির পথ প্রশস্ত হয়েছে।

April 16, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

গত ২৮ মাসে উত্তরবঙ্গের ৩০টি বন্ধ চা বাগান খোলাতে সক্ষম হয়েছে রাজ্য সরকার। নিঃসন্দেহে এই পরিসংখ্যানকে রেকর্ড হিসেবেই দেখছে প্রশাসন। এই বন্ধ চা বাগানগুলিতে ফের উৎপাদন শুরু হওয়ায় অন্তত ৩০ হাজার চা শ্রমিক নতুন করে রোজগারের মুখ দেখেছেন। যদিও এঁদের মধ্যে একটা বড় অংশ বাগান বন্ধ থাকাকালীন সরকারের কাছ থেকে নির্দিষ্ট প্রকল্পে মাসে দেড় হাজার টাকা করে ভাতা পেয়েছে। এখনও ন’টি চা বাগান বন্ধ। এই বন্ধ চা বাগানগুলি খুলে যাওয়ায় উত্তরবঙ্গের সংশ্লিষ্ট জেলায় শাসকদল হারানো জমি ফিরে পাবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

শ্রমদপ্তর ও উত্তরবঙ্গ প্রশাসনের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, শুধু ৩০ হাজার শ্রমিক নয়, এই ৩০টি চা বাগান খুলে যাওয়ায় পরোক্ষে আরও লক্ষাধিক মানুষের রুটি-রুজির পথ প্রশস্ত হয়েছে। এই বাগানগুলিকে কেন্দ্র করে যে বাজার-দোকান রয়েছে, সেগুলি ফের চাঙা হয়েছে। আগামী দিনে বন্ধ থাকা বাগানগুলি খুলে গেলে চা শিল্পকে ঘিরে উত্তরবঙ্গের অর্থনীতির হাল আরও উন্নত হবে।

শ্রমদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, যে বাগানগুলি খুলেছে, তার মধ্যে আটটি দার্জিলিংয়ে। চারটি রয়েছে নবগঠিত কার্শিয়াং মহকুমায়। বাকিগুলি জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলায়। বন্ধ বাগানগুলির জমি রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমতি নিয়ে লিজ হিসেবে আগ্রহী অর্থাৎ বিনিয়োগকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। দপ্তর এবার বন্ধ বাগানগুলি খোলার উদ্যোগ নিয়েছে। এ নিয়ে কয়েকজন বিনিয়োগকারীর সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। শ্রমিকদের প্রাপ্য মেটানোর শর্তে তাঁরা যাতে বাগানগুলি নিতে আগ্রহী হন, সে বিষয়ে আলোচনা চলছে।

গত লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গের চা বলয়ে ধাক্কা খেয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, চা বাগানগুলি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় তার প্রভাব পড়েছিল ভোটযন্ত্রে। ভোটে হারার পর শাসক শিবির বন্ধ বাগান খোলার পাশাপাশি চা শ্রমিকদের নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব দেয়। সেই প্রচেষ্টার ফল হিসেবেই ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে বন্ধ বাগানগুলি একের পর এক খুলতে থাকে। একইসঙ্গে পানীয় জল, বাসস্থান, বিনামূল্যে মাসে পরিবার পিছু ৩৫ কেজি খাস্যশস্য, পরিবার সহ শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসার মতো একগুচ্ছ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে হাঁটেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলস্বরূপ বিধানসভা ভোটে কিছুটা জমি পুনরুদ্ধার করে শাসকদল। এবার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের বাজারমূল্যের নিরিখে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরির বিষয়টি চূড়ান্ত হয়ে গেলে জোড়াফুল শিবির আগামীদিনে আরও বেশি রাজনৈতিক ডিভিডেন্ড পাবে বলে অভিমত পর্যবেক্ষকদের।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen