বিধানসভা নির্বাচনে পিপিই কিট সাপ্লাই করে বিপুল লাভ তন্তুজর
গত বিধানসভা ভোটে পিপিই কিট, গ্লাভস সরবরাহ করার দরুন প্রায় ৫০ কোটি টাকা আয় করল তন্তুজ। অর্থদপ্তর সূত্রের খবর, গত অর্থবর্ষে (২০২১-২২) তন্তুজর লাভ হয়েছে ২০ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা। ওই সময়ে তাদের মোট ব্যবসার পরিমাণ ছিল ৩৭৫ কোটি ৮ লক্ষ টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষ থেকে লাভের মুখ দেখতে শুরু করে রাজ্য সরকারের এই সংস্থাটি। সেবার লাভ হয়েছিল ৩ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা। লাভের অঙ্ক সেই থেকে বাড়তে থাকে। ২০২০-২১ সালের লাভের পরিমাণ ২০ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা।
গত বিধানসভা ভোটে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পদপ্তর থেকে পিপিই কিট, গ্লাভস, ডাস্টবিন, প্লাস্টিকের ব্যাগ প্রভৃতি কেনে। সেগুলি সরবরাহ করে তন্তুজ। গোটা রাজ্যে ১ লক্ষ ২০ হাজার পিপিই কিট তারা দেয়। এছাড়া দিয়েছে ৫৩ লক্ষ ৭৬ হাজার জোড়া একবার ব্যবহার্য রবার গ্লাভস, ৯ কোটি ডিসপোজেবল প্লাস্টিক গ্লাভস, ১০০ ও ৮০ লিটারের ২ লক্ষ ৬১ হাজার ডাস্টবিন এবং ৬ লক্ষ ২৬ হাজার প্লাস্টিক ব্যাগ। সরকারের অভ্যন্তরে লেনদেনের জন্য ১০ শতাংশ লাভ এবং পরিবহণ খরচ দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে এই খাতে তন্তুজর আয় হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
বাম আমলে এই গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাটি পুরোপুরি লোকসানে চলছিল। ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তৈরি হওয়ার পর তন্তুজকে চাঙ্গা করার নীতি নেওয়া হয়। হালফিল ডিজাইনে বিভিন্ন শাড়ি অনেক বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। উন্নত হয়েছে সংস্থার শাড়ি বিপণন ব্যবস্থা। বেড়েছে স্টলের সংখ্যা। বালুচরি শাড়ির অভাবনীয় ডিজাইনের সৌজন্যে তন্তুজ ২০১৮ সালে জাতীয় পুরস্কার পায়। ২০১৫ সালেও হ্যান্ডলুম সামগ্রী বিপণনের জন্য জাতীয় পুরস্কার পায় তন্তুজ।
তন্তুজর বিক্রি বাড়াতে তৈরি করা হয়েছে ভালো কাপড় ও প্রিন্টের কিচেন অ্যাপ্রন। বিশেষ ধরনের রাসায়নিক ব্যবহারের ফলে এগুলির জল ও আগুন নিরোধক ক্ষমতা অনেক বেশি। এগুলি পরে রান্না করা কিছুটা নিরাপদ। অ্যাপ্রনের চাহিদা বেড়েছে। পাশাপাশি রয়েছে গ্লাভস। আরও নতুন কোনও সামগ্রী তৈরি করা যায় কি না তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। করোনাকালে তন্তুজ পিপিই কিট তৈরি করে স্বাস্থ্যদপ্তরকেও বিপুল পরিমাণে সরবরাহ করে। সংস্থাটিকে কীভাবে আরও লাভজনক করা যায়, তার পরিকল্পনা করছে নবান্ন।