অনুব্রতর অণ্ডকোষ নিয়ে নেটমহলে মস্করা, ক্ষুব্ধ চিকিৎসকদের একাংশ
ডা: ইন্দ্রনীল সাহা
অনুব্রত মণ্ডলের গোপনাঙ্গে যে সমস্যা রয়েছে তা নিয়ে নানা ধরণের মজা করা হচ্ছে। একজন চিকিৎসক হিসেবে বলতে পারি যে কোনও রোগীর ব্যক্তিগত তথ্য এভাবে বাইরে আনা উচিত নয়। এটা অনৈতিক।
ধরুন, কোনও রোগীর ক্যানসার হয়েছে। তাঁর ঠিক কী কী সমস্যা আছে সেই বিষয়টি ডাক্তার জানবেন। অথবা মেডিক্যাল বোর্ড জানবে। হাসপাতালের ভিতর থেকে ওই খবর বাইরে বেরোনো উচিত নয়।
কারও গোপনাঙ্গে কোনও সমস্যা রয়েছে কিনা তা এভাবে প্রকাশ্যে আনা যায় না। এ নিয়ে সকলে মজা করছেন বটে। তবে আমার মতে, কারও ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে এই ধরনের মজা হওয়াটাও সমীচীন নয়।
একজন রোগীর অধিকার রয়েছে তাঁর ব্যক্তিগত বিষয় গোপন রাখা। সেক্ষেত্রে হাসপাতালকেও সেই গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। ভাবুন তো, আমাদের ক্ষেত্রে যদি বিষয়টি ঘটত, তাহলে কী হতো? কারও অণ্ডকোষে সমস্যা থাকতেই পারে। কিন্তু, সে কথা যদি গোটা বিশ্ব জেনে যায় তাহলে তো আমাদের খারাপ লাগবেই। তাই না? আমরাও অপমানিত বোধ করব। এক্ষেত্রেও তো তেমনটাই ঘটেছে। এটা উচিত নয়।
হাসপাতালের অন্দর থেকে কোনও রোগীর খবর বাইরে যাওয়া উচিত নয়। আর এই বিষয়টি তো ভীষন সেনসিটিভ। আমি জানি না গোটা ব্যাপারটি ওঁর সম্মতিতে হয়েছে কিনা। তবে যদি সেটা না হয়ে থাকে, তাহলে অত্যন্ত অনৈতিক কাজ হয়েছে। যদি এটা বিদেশ হত, তাহলে এতক্ষণে হাসপাতালের নামে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হত। মেডিক্যাল বোর্ড কোনওভাবেই এই ধরনের তথ্য সামনে আনতে পারে না। চাইলে উনি আইনি ব্যবস্থা নিতেই পারেন।
এখন সত্যিই মজার পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে ব্যাপারটি। সকলকেই মিম শেয়ার করছেন। জোকস বলছেন। আমরাও হয়ত একটা দুটো মিম লাইক করে ফেলছি। তবে একজন চিকিৎসক হিসেবে বলতে পারি যে এই কাজটা উচিত হচ্ছে না।
আজ যদি কোনও মহিলাকে নিয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটত, তাহলে কী একই জিনিস হত? সকলে বিষয়টিকে এত সহজে মেনে নিতেন? মানতেন না। আর সেটাই উচিত। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করা দরকার।
ধর্ষনের ক্ষেত্রেও চিকিৎসকরা সমস্ত গোপনীয়তা বজায় রাখেন। কারণ, সেটাও নৈতিক কর্তব্য। এক্ষেত্রেও যা হচ্ছে সত্যিই উচিত কাজ হচ্ছে না।