বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

আগেও স্থগিত হয়েছিল পুরীর রথযাত্রা!

June 22, 2020 | 2 min read

এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার স্থগিত থেকেছে জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার রথযাত্রা। তবে ২৮৪ বছরের মধ্যে এই প্রথম বন্ধ থাকতে চলেছে বহু বছরের ঐতিহ্যবাহী এই অনুষ্ঠান।

ইসলামিক শাসকদের হামলার কারণে ১৫৬৮ সাল থেকে ১৭৩৫ সালের মধ্যে মোট ৩২ বছর বন্ধ থেকেছে পুরীর রথযাত্রা। এর আগে কবে কবে পুরীর রথযাত্রা স্থগিত থেকেছে, জেনে নিন।

  • — ১৫৬৮ সালে বাংলার রাজা সুলেইমান কিররানির জেনারেল কালা পাহাড় পুরীর জগন্নাথ মন্দির আক্রমণ করেন। সেই সময় ১৫৬৮ থেকে ১৫৭৭ সাল পর্যন্ত মোট ৯ বছর বন্ধ ছিল রথযাত্রা।
  • — এরপর ১৬০১ সালে তত্‍কালীন বাংলার নবাবের কম্যান্ডার মিরজা খুররাম হামলা চালায় পুরীর মন্দিরে। জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি রক্ষা করতে মূর্তিগুলিকে পুরী থেকে ১৩-১৪ কিলোমিটার দূরে কপিলেশ্বরের পঞ্চমুখী গোসানি মন্দিরে সরিয়ে নিয়ে যান। সেই বছর রথযাত্রা বন্ধ থাকে।
  • — ১৬০৭ সালে ওডিশার মুঘল সুবেদার কোয়াসিম খান হামলা চালান জগন্নাথ মন্দিরে। মূর্তিগুলিকে বাঁচাকে লুকিয়ে খুড়গার গোপালা জিউ মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই বছরও রথযাত্রা হয় না।
পুরীর রথযাত্রা
  • — ১৬১১ সালেও বন্ধ থাকে রথযাত্রা। আকবরের সভাষদ টোডর মলের ছেলে কল্যান মল ওডিশার সুবেদার হয়ে এসে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে হামলা চালান। আক্রমণের খবর আগেই পেয়ে মূর্তিগুলি চিলিকা হৃদের মাহিসানসিতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
  • — ১৬১৭ সালে আবার জগন্নাথ মন্দিরের হামলা চালায় কল্যান মল। তবে তার আসার আগেই তিনটি মূর্তি চিলিকা হৃদের গুরুবাইগড়ে সরিয়ে ফেলা হয়।
  • — এর পরে ১৬২১ এবং ১৬২২ এই দুই বছর বন্ধ থাকে রথযাত্রা। মুসলিম সুবেদার আহমেদ বেগ মন্দিরে হামলা করায় জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি বানাপুরের আন্ধারিয়াগড়ে সরিয়ে ফেলা হয়।
  • — এরপর ১৬৯২ সালে ওডিশার মুঘল কম্যান্ডার একরাম খান মন্দিরে হামলা করেন। এবারেও হামলার খবর আগে থেকে পেয়ে পুরোহিতরা খুড়দার বিমলা মন্দিরে লুকিয়ে রাখেন। সেখান থেকে মূর্তিগুলি চিলিকা হৃদের কাছে গাডাকোকালা গ্রামে সরিয়ে ফেলা হয়। সেখান থেকে আবার বানাপুরের বড়া হনতুয়াদা গ্রামে সরানো হয় মূর্তিগুলি। এই কারণে ১৩ বছর সেবার রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হতে পারেনি।
  • — ১৭৩১ সালে ওডিশার ডেপুটি গভর্নর মহম্মদ তাকি খান মন্দিরে হামলা চালান। চিলিকা হৃদের কঙ্কনাশেখারি কুড়ায় সেবার লুকিয়ে রাখা হয় মূর্তিগুলি। সেখান থেকে মূর্তিগুলি নিয়ে যাওয়া হয় খুড়দার হরিশ্বর মণ্ডপে। সেখান থেকে আবার গঞ্জাম জেলার চিকিলি গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয় মূর্তিগুলি। সেই বছরও অনুষ্ঠিত হয়নি পুরীর রথযাত্রা।
  • — ১৭৩৩ সালে ফের পুরীর মন্দিরে হামলা চালান তাকি খান। সেবারও পুরোহিতেরা প্রথমে হরিশ্বর মণ্ডপ এবং সেখান থেকে গঞ্জমা জেলার মারদা মন্দিরে লুকিয়ে রাখেন মূর্তিগুলি। এর ফলে ১৭৩৩ থেকে ১৭৩৫ সাল পর্যন্ত বন্ধ থাকে পুরীর রথযাত্রা।
  • —১৭৩৫-এর ২০২০। করোনা অতিমারীর কারণে ফের ২৮৪ বছর পর বন্ধ থাকতে চলেছে পুরীর রথযাত্রা।
TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#covid-19, #puri rath yatra

আরো দেখুন