আজ বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন, উপস্থিত থাকবেন ১৯টি দেশের প্রতিনিধি
বিনিয়োগের দুনিয়ায় বাংলাকে তুলে ধরতে আজ, বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। ২০১৯ সালের পর শহরে ফের বসছে এত বড় মাপের শিল্প-আসর। দেশের তাবড় শিল্পপতি ছাড়াও এখানে হাজির থাকবেন ১৯টি দেশের কয়েকশো প্রতিনিধি। মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে নিউটাউনের বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে। এছাড়াও বিশ্ব বাংলা মেলা প্রাঙ্গণ ও সায়েন্স সিটিতে বসবে নানা আলোচনাসভা-প্রদর্শনী। এই শো-কেস অনুষ্ঠানের জন্য সেজে উঠেছে কলকাতা। গোটা অনুষ্ঠানটির তদারকি করতে মঙ্গলবার থেকেই আসরে নেমেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বিকেল থেকেই তিনি জাপান, বাংলাদেশ, কেনিয়ার মতো দেশগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন। নৈশভোজেও আর এক প্রস্ত আলাপ সারেন শিল্পপতিদের সঙ্গে। আজ সম্মেলনের মূল অনুষ্ঠানে তিনি শিল্পমহলকে কী বার্তা দেন, তা নিয়ে আগ্রহ তুঙ্গে। তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর যতগুলি বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন হয়েছে, তাতে মোট বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে ১২ লক্ষ ৩৫ হাজার কোটি টাকার। তার অনেকটাই বাস্তবায়িত হয়েছে বা প্রকল্প গড়ার কাজ চলছে। এবার সেই অঙ্ক কোথায় পৌঁছায়, নজর থাকবে সেদিকেও।
এদিনের সভায় উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে গৌতম আদানি, কুমার মঙ্গলম বিড়লা, হিন্দুস্থান ইউনিলিভারের শীর্ষকর্তা সঞ্জীব মেহতা, রাজীব বাজাজ, জেএসডব্লু গোষ্ঠীর কর্ণধার সজ্জন জিন্দাল, এসবিআই চেয়ারম্যান দীনেশ খাড়া, ওয়াইকে মোদি, রাকেশ ভারতী মিত্তল, আইটিসি চেয়ারম্যান সঞ্জীব পুরি, নিরঞ্জন হিরানন্দানি, হর্ষবর্ধন নেওটিয়া, সঞ্জীব গোয়েঙ্কা সহ বিশিষ্ট শিল্পপতিদের। তাঁদের অভ্যর্থনা জানাতে নতুন করে সাজানো হয়েছে বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টার। মূল অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সেখানেই অস্থায়ী তাঁবুতে আলাদা আলাদা করে বসবে অলোচনাসভা। রাখা থাকছে ‘জায়ান্ট’ প্রজেক্টর। প্রতিটি দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শিল্প মহলের আলাপ আলোচনার জন্য আলাদা আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কলকাতা সহ বাংলার আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র এবং বর্ণময় সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হবে গোটা অনুষ্ঠানস্থলে।
এবার শিল্প সম্মেলনে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্প। এই প্রকল্পে নতুন করে যাঁরা সুবিধা পাবেন, তাঁদের মধ্যে পাঁচ লক্ষ মহিলা সারা রাজ্য থেকে ভার্চুয়ালভাবে উপস্থিত থাকবেন এই সম্মেলনে। তাঁদের প্রত্যেককে মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছাবার্তা দেওয়া হবে। এছাড়াও দুর্গাপুজোকে বিশ্ব সভায় তুলে ধরতে আলাদা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে আজই। দেউচা-পাঁচামি ,তাজপুর বন্দর প্রকল্প যেমন এবার বিশেষ গুরুত্ব পাবে, তেমনই উৎপাদন শিল্প থেকে শুরু করে কৃষিভিত্তিক শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি সহ পরিষেবা শিল্প— নজর থাকবে সবই। শিল্পের পথ সহজ করতে ‘ইজ অব ডুইং বিজনেস’-এর জন্য নতুন করে গড়া হয়েছে ‘শিল্পসাথী’ পোর্টাল। তার উদ্বোধন হওয়ার কথা আজ।
এবারের সম্মেলনে খড়গপুর শিল্পতালুকে এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব দিতে পারে আদিত্য বিড়লা গ্রুপ। হাওড়ায় লজিস্টিক হাব গড়ার প্রস্তাব আসতে পারে আদানিদের পক্ষ থেকে। খনি সংক্রান্ত যন্ত্রপাতির কারখানা গড়তে ৫০০ কোটি টাকা লগ্নির প্রস্তাব দেওয়ার কথা গেইনওয়েল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের। প্রস্তাব আসতে পারে আইটিসি’র তরফেও। এছাড়াও ইলেকট্রিক বাস তৈরির কারখানার চুক্তি হতে পারে এখানে।