দেশ বিভাগে ফিরে যান

চার দিনে তিন বার! কংগ্রেসের সঙ্গে পিকে-র বৈঠকে জল্পনা

April 20, 2022 | 2 min read

ছবি সৌঃ আজতক

দশ জনপথ থেকে ৬১ সাউথ অ্যাভিনিউ-এর দূরত্ব সামান্য কয়েক কিলোমিটার। প্রথমটি সনিয়া গান্ধীর বাসভবন, দ্বিতীয়টি তৃণমূল কংগ্রেসের অস্থায়ী অফিস। মঙ্গলবার গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে দেখা গেল এই দু’টি বাড়িকেই।

গত চার দিনের মধ্যে আজ তৃতীয় বার ১০ জনপথে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা-সহ শীর্ষ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে)। অন্য দিকে সাউথ অ্যাভেনিউয়ে ডাকা সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করলেন সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া রিপুন বরা। সেই সঙ্গে পিকে সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তৃণমূলের সুস্মিতা দেব দাবি করলেন, তৃণমূলে অনেক ভোটকুশলীর মধ্যে পিকে এক জন মাত্র। বিরোধী জোট রাজনীতি বিষয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেছেন, সেটাই শেষ কথা।

সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পিকে। আজ তিনি ফের বসেছিলেন, প্রিয়ঙ্কা, কমল নাথ, দিগ্বিজয় সিংহ, অম্বিকা সোনি, কে সি বেণুগোপাল, রণদীপ সুরজেওয়ালাদের সঙ্গে। রাজনৈতিক শিবিরে এ নিয়ে আর কোনও অস্পষ্টতা নেই যে, পিকে কংগ্রেসে যোগ দিতে চাইছেন তাঁর নিজের শর্তে। কিন্তু সেই সব শর্ত কংগ্রেস শেষ পর্যন্ত কতটা মানবে, তা নিয়ে দর কষাকষির জন্যই প্রলম্বিত হচ্ছে পিকে-কংগ্রেস বৈঠক।

কংগ্রেসে পিকে-র যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে সুস্মিতা দেব আজ বলেন, “আমি সবেমাত্র গত অগস্টে তৃণমূল কংগ্রেস যোগ দিয়েছি। কিন্তু তাতেই যা দেখেছি। বাংলায় তৃণমূলের হয়ে কাজ করার জন্য অনেক ভোটকুশলী রয়েছেন। এক জনই যে রয়েছেন, এই ধারণা ঠিক নয়। হ্যাঁ তিনি (পিকে) ওই অসংখ্য ভোটকুশলীর এক জন।” পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, দলের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা বলছে, বাংলার মানুষের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রহণযোগ্যতা ৭৫ শতাংশেরও বেশি। বিরোধী জোট গড়ার প্রশ্নে পিকে-র ভূমিকাকে কার্যত গুরুত্বহীন করে দিয়ে সুস্মিতা বলেন, “অনেক দিন আগেই মমতা বলেছিলেন বিজেপিকে পরাস্ত করতে বিরোধী দলগুলিকে একজোট করতে হবে। আমরা কোনও ভোটকুশলী বা অ-ভোটকুশলীকে নিয়ে মন্তব্য করতে চাইছি না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেছেন সেটাই থাকবে।”

পাশাপাশি কংগ্রেসকে একহাত নিয়ে রিপুন বরা দাবি করেন, কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব ও দলের নেতাদের একাংশের সঙ্গে বিজেপির বোঝাপড়ার কারণেই তাঁকে দল ছাড়তে হল। তাঁর কথায়, “কলকাতায় গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনার পরে তৃণমূলে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি বিশ্বাস করতাম দেশকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাওয়া বিজেপির সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা রাখে কংগ্রেস। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে দেখলাম, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার বদলে কংগ্রেসের নেতারা নিজেদের মধ্যে ক্ষমতার লড়াইতেই ব্যস্ত। তার ফলেই অসমে বিজেপি ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।”

রিপুনকে সমর্থন করে সুস্মিতাও বলেন, “রাজ্যসভার ভোটে প্রবীণ রিপুন কংগ্রেসের হয়ে লড়লেও কংগ্রেসের নেতারা তাঁর হয়ে লড়েননি। এমনকি অসম থেকে রাজ্যসভায় কংগ্রেসের শেষ আসনটি ধরে রাখার চেষ্টাও চালায়নি দল। পরাজয়ের পরে রিপুনকেই দোষারোপ করা হয়েছে। কিন্তু উত্তর-পূর্বের এক জন কংগ্রেস নেতাও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার সৌজন্যটুকু দেখাননি।”

অসমে অনেক বছর ধরে সংগঠন চালিয়ে গেলেও দেড় দফায় দুই বিধায়ক বাদে উল্লেখযোগ্য সাফল্য নেই কংগ্রেসের। সুস্মিতার কথায়, “অসমের একটা বড় অংশের মানুষ বিজেপিকে পছন্দ করেন না। কিন্তু তাঁদের কাছে যোগ্য বিকল্প নেই। তৃণমূল সেই প্রতিবাদী অংশের কণ্ঠ হতে চায়। রাজ্যে নতুন ভাবে সংগঠন তৈরি করবে তৃণমূল।” সুস্মিতা আরও বলেন, অসমের উজানি, নামনি অংশ ও বরাক উপত্যকার রাজনীতিতে ফারাক রয়েছে। এই তিন অংশকে ঐক্যবদ্ধ করে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে নামাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লক্ষ্য।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Prashant Kishor, #Mamata Banerjee, #abhishek banerjee, #Sushmita Dev

আরো দেখুন