গরমে বাড়ছে চাহিদা, দিনে ৮ ঘণ্টার বেশি বন্ধ থাকতে পারে দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ
গত একশো বছরের মধ্যে এত উষ্ণ মার্চ আগে দেখা যায়নি। সেই নিরিখে চলতি বছরের মার্চ মাস ইতিমধ্যেই রেকর্ড করে বসে রয়েছে। মার্চ পেরিয়ে এখন এপ্রিল। তাপমাত্রার পারদ বাড়ছে তো বাড়ছেই। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গরম। আবহবিদরা জানাচ্ছেন, গরম কমার কোনও সম্ভাবনাই নেই। ভোগান্তিরও শেষ নেই। তার মধ্যেই নতুন সমস্যা দেখা দিতে পারে এদেশে।
দিনে আট ঘণ্টারও বেশি সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ (Loadshedding) থাকতে পারে। ইতিমধ্যেই পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ এবং অন্ধ্রপ্রদেশের কিছু জায়গায় আট ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ থাকছে না। একে গরম, তার উপরে লোডশেডিং, এই সাঁড়াশি আক্রমণে মানুষ জেরবার।
প্রচণ্ড গরমের মধ্যে বিদ্যুৎ না থাকা নিয়ে ইতিমধ্যেই চিন্তার ভাঁজ আমজনতার কপালে। এহেন পরিস্থিতিতে দুটো রাস্তা খোলা থাকছে মানুষের সামনে। হয় প্রচণ্ড গরম সহ্য করা, নয়তো অনেক খরচ করে বিদ্যুৎ সরবরাহের বিকল্প ব্যবস্থা করে নেওয়া। অল ইন্ডিয়া পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ার্স ফেডারেশনের চেয়ারম্যান শৈলেন্দ্র দুবে জানিয়েছেন, “প্রতি বছরই এই সময়ে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যায়। কিন্তু এই বছরের পরিস্থিতি আলাদা।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, কয়লা সংকটই বিদ্যুৎ সমস্যার মূল। ভারতে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় তার সত্তর শতাংশই তৈরি হয় কয়লা থেকে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের (Russia-Ukraine War) আবহে বিদ্যুতের দামে লাগাম টানতে অপারগ হয়ে পড়ছে সরকার। অন্যদিকে, কারখানাগুলিতে সঠিক পরিমাণে বিদ্যুতের জোগান না থাকলে উৎপাদন ব্যাহত হবে, যার প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতিতে। শৈলেন্দ্র দুবে বলেছেন, “তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি কয়লার অভাবে কাজ করতে পারছে না। সেই কারণেই প্রয়োজন মতো পরিমাণে বিদ্যুৎ তৈরি করা যাচ্ছে না।”
গত দু’বছরে অধিকাংশ কলকারখানা বন্ধ থাকায় বিদ্যুতের অভাব বোঝা যায়নি। বর্তমানে কারখানাগুলি চালু হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সমানুপাতে কয়লার জোগান বাড়েনি। তবে গ্রীষ্মেই শেষ নয়, বর্ষাকালেও কয়লা তুলতে এবং চালান করতে সমস্যা হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি বৈদ্যুতিক সংকট দেখা যাবে এই বছরে।