শুরু হতে চলেছে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীদের করোনা পরীক্ষা
দেশে করোনা বাড়ছে। কিন্তু রাজ্যেও কি নিঃশব্দে ছড়াচ্ছে করোনা সংক্রমণ? বড় বিপদ ঘনিয়ে আসার আগে তাই করোনার হাল হকিকত জানতে উদ্যোগী হল রাজ্য। স্বাস্থ্য ভবন ঠিক করেছে, জেলায় জেলায় সাধারণ মানুষের করোনা পরীক্ষা করিয়েই রাজ্যে করোনার বর্তমান পরিস্থিতির পর্যালোচনা করা হবে।
করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর সময় থেকেই দেশ-বিদেশের অতিমারি বিশেষজ্ঞরা বেশি করে করোনা পরীক্ষা করানোর উপর জোর দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাজ্যের স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ দপ্তর একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, আগামী ২৭ এপ্রিল থেকে জেলায় জেলায় হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসবেন যে সব রোগী, তাঁদের করোনা পরীক্ষা করানো হবে। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, রোগীদের থেকে প্রাপ্ত নমুনার পরীক্ষা করেই রাজ্যে করোনা সংক্রমণের এখনকার পরিস্থিতি কী, সে সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
কী ভাবে হবে পরীক্ষা? স্বাস্থ্য ভবনের বিবৃতিতে তা বিশদে জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, একমাত্র শ্বাসকষ্টের রোগী ছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা প্রায় সমস্ত রোগীর থেকেই নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষা করা হবে। অস্ত্রোপচারের রোগী, এমনকি দাঁতের চিকিৎসা জন্যও যাঁরা আসছেন, তাঁদেরও হবে পরীক্ষা। এ জন্য বিভিন্ন জেলার এক একটি হাসপাতাল নির্বাচন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ২৮টি জেলার ২৮টি হাসপাতালে ৪০০ জন করে রোগীর নমুনা সংগ্রহ করবে স্বাস্থ্য বিভাগ। তার পর সেই সব নমুনা (যার সংখ্যা হবে ১১ হাজার ২০০টি) পরীক্ষা করে দেখা হবে রাজ্যে করোনার পরিস্থিতি কী রকম।
২৭ তারিখ থেকে শুরু হয়ে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে নমুনা সংগ্রহের কাজ। ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সমস্ত নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট জমা দিতে হবে। এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নোডাল অফিসারের কাছে।
রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের এই পরীক্ষাকে ‘সেন্টিনেল সারভেল্যান্স’ বলা হচ্ছে। করোনার উপর নজরদারি করার এই পরীক্ষার সবে প্রথম রাউন্ডের কাজ শুরু হল বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। তবে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, হাতে সময় থাকতে এই ধরনের নজরদারির যথেষ্ট উপযোগিতা রয়েছে। বিশেষ করে উপসর্গহীনদের থেকে করোনা ছড়ানোর যে ঝুঁকি থাকে, তা-ও এড়ানো যাবে এই ধরনের নজরদারি পরীক্ষায়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দলুই বলেছেন, ‘‘আমাদের অগোচরে কোভিড বাড়ছে কি না, বা কোভিড আন রিপোর্টেড থেকে যাচ্ছে কি না, তা জানা যাবে এই পরীক্ষায়।’’