রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

ট্রেড ইউনিয়ন ভাঙিয়ে করা যাবে না ঠিকাদারি, ‘দাওয়াই’ মুখ্যমন্ত্রীর

April 23, 2022 | 2 min read

শিল্পস্থাপন আর কর্মসংস্থানই এখন তাঁর পাখির চোখ। তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলায় লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে। ‘ট্রেড ইউনিয়ন’-এর নামে ‘দাদাগিরি’ যাতে শিল্পবান্ধব পরিবেশকে কলুষিত করতে না পারে, তার জন্য কড়া ‘দাওয়াই’ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি চান, নির্ঝঞ্ঝাট শিল্প ও শ্রমিক বান্ধব পরিবেশ। তাঁর নির্দেশ, ট্রেড ইউনিয়নকে ভাঙিয়ে করা যাবে না ঠিকাদারি। ট্রেড ইউনিয়নের নামে শ্রমিক শোষণ কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। ভবিষ্যতে কোনও ঠিকাদারকে শ্রমিক নেতার জায়গাও দেওয়া হবে না। গত মঙ্গলবার হলদিয়ার আইওসিএল ক্লাবে মুখ্যমন্ত্রীর এই কড়া বার্তাই দলের শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীদের দিয়ে এসেছেন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক এবং আইএনটিটিইউসি’র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন কলকারখানায় শ্রমিক সরবরাহকারী ঠিকাদাররাও। বিনিয়োগ ও শিল্পস্থাপনের পথে ‘প্রতিবন্ধকতা’ দূর করার এই অভিযান হলদিয়া দিয়ে শুরু হলেও, ধাপে ধাপে তা কার্যকর হবে আসানসোল-দুর্গাপুর, খড়্গপুর, বারাকপুর, শিলিগুড়ি সহ রাজ্যের সব শিল্পাঞ্চলে। নবান্ন সূত্রের খবর, হলদিয়া পুরসভার দুই কাউন্সিলার সহ মোট চার জন শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে তোলাবাজি, শ্রমিকদের সঙ্গে জুলুম, নায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করার মতো বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। আইএনটিটিইউসি সূত্রে খবর, ওই চারজনকেই শ্রমিক ইউনিয়ন সংশ্লিষ্ট পদ থেকে অপসারিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ হলদিয়া পুরসভার নির্বাচন। যে দুই কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে দলের নাম ভাঙিয়ে ট্রেড ইউনিয়নের আড়ালে ঠিকাদারি, তোলাবাজি ও শ্রমিক শোষণের অভিযোগ উঠেছে, আগামী নির্বাচনে তাঁদের টিকিট দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন স্বয়ং দলনেত্রী। শুধু হলদিয়া নয়, শ্রমিক শোষণকারী এহেন জুলমবাজ-তোলাবাজ কাউন্সিলারদের বিরুদ্ধে গোটা রাজ্য জুড়েই এ ব্যবস্থা কার্যকর করতে চাইছে জোড়াফুল শিবির। 

হলদিয়ায় ট্রেড ইউনিয়নের নাম করে ঠিকাদারদের একাংশের শ্রমিক শোষণের বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আসে। আইএনটিটিইউসি সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিয়ায় অভিযোগের বিষয়গুলি নজরে আসার পরই ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বর্ষীয়ান নেতা তথা মন্ত্রী মলয় ঘটকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলকে এবিষয়ে কড়া ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। সেই  প্রতিনিধি দলে মলয়বাবু, আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নবান্নের এক আধিকারিক ছিলেন। সেই দলের তরফেই শ্রমমন্ত্রী মলয়বাবু মুখ্যমন্ত্রীর ‘নিদান’ শুনিয়ে এসেছেন। 

মলয়বাবু বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে হলদিয়ায় শ্রমিক সরবরাহকারী ঠিকাদারদের সঙ্গে বৈঠক করে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারদের একাংশ ট্রেড ইউনিয়নের নাম করে জুলুমবাজি করছে, তা যেকোনও মূল্যে বন্ধ করতে বদ্ধপরিকর রাজ্য। শ্রমিকদের বঞ্চনার হাত থেকে মুক্তি দেওয়াই লক্ষ্য। পার্টির নাম করে ঠিকাদারি এবং ট্রেড ইউনিয়ন করা তৃণমূল মানবে না। ভবিষ্যতে কোনও ঠিকদারকে শ্রমিক নেতার জায়গা দেওয়া হবে না। হলদিয়া থেকে এই কাজ শুরু হল। রাজ্যের বাকি শিল্পাঞ্চলগুলিতেও একই বার্তা দেওয়া হবে। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Mamata Banerjee, #trade unions

আরো দেখুন