রামদেবের করোনা-ওষুধের বিজ্ঞাপন বন্ধের নির্দেশ কেন্দ্রের!
গোটা বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এ দেশেও লাগামছাড়া হয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস। সারা পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা পাঁচ মাস ধরে চেষ্টা চালাচ্ছেন করোনার প্রতিষেধক তৈরির। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ১০০% নিশ্চিয়তা নিয়ে কোনও ওষুধ বা প্রতিষেধক বাজারে আসেনি। এই পরিস্থিতিতে বাবা রামদেবের সংস্থা ‘পতঞ্জলি’ ঘোষণা করে মঙ্গলবারই তাঁরা বাজারে আনতে চলেছে করোনার আয়ুর্বেদিক ওষুধ। শোরগোল পড়ে যায় দিকেদিকে। পরিস্থিতি দেখে এবার এগিয়ে এল কেন্দ্র।
কেন্দ্রের আয়ুষ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, পতঞ্জলির কাছে ওষুধ ও তার কম্পোজিশন নিয়ে সমস্ত তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়েছে। জানানো হয়েছে, সরকারি পরীক্ষা ছাড়া এভাবে ওষুধের বিজ্ঞাপন ড্রাগস ও ম্যাজিক রেমেডিস অ্যাক্ট, ১৯৫৪-এর আওতায় পড়বে।
বিবৃতিতে আয়ুষ মন্ত্রক জানিয়েছে, ‘সংবাদমাধ্যম থেকে মন্ত্রক জানতে পেরেছে কোভিডের জন্য পতঞ্জলির ওষুধের কথা। তাঁদের কাছে সমস্ত তথ্য চাওয়া হয়েছে। সরকারের পরীক্ষার আগে এ বিষয়ে সমস্ত বিজ্ঞাপন বন্ধ রাখতে হবে।’
দিনকয়েক আগেই করোনার ওষুধের পরীক্ষামূলক প্রয়োগে সাফল্যের চাঞ্চল্যকর দাবি করেছিল দেশীয় সংস্থা পতঞ্জলি। সংবাদসংস্থা ANI-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে করেছেন যোগগুরু বাবা রামদেবের সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও CEO আচার্য বালকৃষ্ণ বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়ানোর পরই আমরা একদল বিজ্ঞানীকে নিয়োগ করেছিলাম। ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার উপাদান খুঁজে বের করা হয়। এরপর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয় করোনা পজিটিভ রোগীদের উপর। আমরা ১০০% ইতিবাচক ফলাফল পেয়েছি।’
এখানেই শেষ নয়, তাঁদের ওষুধের গুণাগুণ নিয়ে বলতে গিয়ে বালাকৃষ্ণ জানিয়েছিলেন, তাঁদের ওষুধে ৫-১৪ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন করোনা রোগীরা। তাঁদের পরবর্তী করোনা পরীক্ষার রিপোর্টও নেগেটিভ এসেছে।
রামদেব সেই ওষুধ সামনে এনে বলেন, ‘করোনিল ও শ্বাসারি’ নামে ওই ওষুধটি দেশের ২৮০ জন করোনা রোগীর মধ্যে প্রয়োগ করে দেখা হয়েছে। মাত্র ৫৪৫ টাকা দামের ওই ওষুধের মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই সারা দেশে পাওয়া যাবে। দিন কয়েক আগে বাবা রামদেব (Baba Ramdev) জানিয়েছিলেন, অশ্বগন্ধা, গিলোই ও তুলসি সমৃদ্ধ করোনিল খেলে করোনায় আক্রান্ত রোগী ১০০ শতাংশ সুস্থ হয়ে উঠবেন। সেই জীবনদায়ী ওষুধই মঙ্গলবার লঞ্চ করেন তিনি। শুধু করোনার চিকিৎসা নয়, করোনাকে সমূলে উপড়ে ফেলার ক্ষমতা ভারতীয় আয়ুর্বেদের আছে বলে রামদেবের দাবি। যদিও সেই ওষুধের কোনও পরীক্ষাই হয়নি সরকারি স্তরে। তাই একপ্রকার সমালোচনার মুখেই পতঞ্জলিকে নিয়ে কড়া অবস্থান নিল কেন্দ্র।