গঠিত হল সিপিএমের নতুন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী, ঠাঁই হল না লড়াকু ছাত্র-যুবদের
গঠিত হল সিপিএমের (CPIM) নতুন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী। বাদ পড়লেন বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, রবীন দেবরা। জায়গা পেলেন পক্ককেশ জীবেশ সরকার, দেবলীনা হেমব্রম, দেবব্রত ঘোষ ও জিয়াউল আলমরা। সম্পাদকমণ্ডলীতে জায়গা হল না লড়াকু ছাত্র-যুব কোনও নেতৃত্বের। যোগ্যতা নয়, প্রাধান্য পেল শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, গোষ্ঠীকোন্দল ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা ও পক্ককেশ তাত্ত্বিক নেতারা। তাই বৈঠক শেষে একরাশ ক্ষোভ, অভিমান ও হতাশা নিয়ে আলিমুদ্দিন ছাড়লেন রাজ্য কমিটির সদস্যরা। কেন এক নেতাকে একাধিক দায়িত্ব, উঠল সেই প্রশ্নও।
বয়সের গেরোয় আগেই রাজ্য ও কেন্দ্রীয় কমিটি এবং পলিটব্যুরো ছেড়েছিলেন। এবার রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী থেকেও অব্যাহতি নিলেন অশীতিপর বিমান বসু। ফলে পার্টির কোনও স্তরেই আর থাকলেন না তিনি। রইল শুধু সদস্যপদ। তার সঙ্গে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী থেকে সরে দাঁড়ালেন সদ্য প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, রবীন দেব ও মৃদুল দে। এঁদের সকলকেই বয়সের কারণে সরে যেতে হয়েছে বলে পার্টির তরফে জানানো হয়।
কিন্তু প্রশ্ন অন্য জায়গায়। আর সেটা সম্পাদকমণ্ডলীতে জায়গা পাওয়া একাধিক সদস্যকে নিয়ে। কোন যোগ্যতায় জীবেশ সরকার, জীয়াউল আলম ও হুগলির জেলা সম্পাদক দেবদ্রত ঘোষের মতো বর্ষীয়ানরা জায়গা পেলেন সেই প্রশ্নে জন্ম দিল নতুন বিতর্কের। আবার, কীসের প্রয়োজনে অন্যদের বঞ্চিত করে নদিয়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদকদের সব কমিটিতেই জায়গা করে দেওয়া হচ্ছে?
কারণ এই দুই জেলার সম্পাদক এবারই কেরলের কান্নুরে অনুষ্ঠিত পার্টি কংগ্রেসে কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন। মনে করা হচ্ছে, যেহেতু প্রয়াত প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের জেলার নেতা মৃদুল দেকে সব কমিটি থেকে সরে যেতে হয়েছে তাই তাঁর ঘনিষ্ঠ সুমিত দে-কে গঠনতন্ত্র ভেঙে জায়গা করে দেওয়া হচ্ছে। আর দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সুজন চক্রবর্তীর প্রভাব কমাতে শমীক লাহিড়ীকে জায়গা দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করছে আলিমুদ্দিনের একাংশ। সম্পাদকমণ্ডলীর বেশ কয়েকজনের যোগ্যতা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। এদের মধ্যে অন্যতম পলাশ দাস ও দেবব্রত ঘোষ। দু’জনেই পার্টির দুই শীর্ষ নেতার ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। সে কারণেই মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, সুশান্ত ঘোষ, তাপস সিনহা বা সায়নদীপদের এবারও বঞ্চিত হতে হল বলে ধারণা পার্টির একাংশের।