গরমের ছুটিকে ঢাল বানিয়ে রাজ্য ভাগের উস্কানি বিজেপি বিধায়কের, নিন্দা সব মহলে
এতদিন দলের অন্য সাংসদ, বিধায়করা উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য করার দাবি তুলেছেন। এবার সেই পথ অনুসরণ করে বিজেপির শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষও উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য করার দাবি জানালেন।
দক্ষিণবঙ্গে এখন প্রচণ্ড দাবদাহ চলছে। এই গরম থেকে পড়ুয়াদের স্বস্তি দিতে গ্রীষ্মের ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা বিজেপির রাজ্য সহ সম্পাদক শঙ্কর ঘোষ। দক্ষিণবঙ্গে স্কুল বন্ধ রাখা হলেও এ সময়ে শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের সব স্কুল খোলা রাখার দাবি নিয়ে বৃহস্পতিবার তিনি শিলিগুড়িতে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) রাজীব প্রামাণিকের সঙ্গে কথা বলেন। পরে সাংবাদিকদের তিনি জানান, উত্তরবঙ্গে এখনও তেমনভাবে গরম পড়েনি। দক্ষিণবঙ্গকে সামনে রেখে উত্তরবঙ্গেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক নয়। প্রতিটি ক্ষেত্রেই এটা বারবার হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের প্রতি রাজ্য সরকারের এই বঞ্চনার জন্যই উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য করার দাবি ওঠে।
শঙ্কর ঘোষ বলেন, এতদিন আমার দলের অন্য সাংসদ, বিধায়করা এই দাবি তুলেছেন। তখনও আমি ঐক্যবদ্ধ বাংলার পক্ষেই ছিলাম। কিন্তু, দেখছি দিনের পর দিন শিক্ষা, স্বাস্থ্য সবেতেই উত্তরবঙ্গের প্রতি বঞ্চনা বেড়ে চলেছে। তারজন্য আমিও এখন উত্তরবঙ্গকে নিয়ে আলাদা রাজ্য করার দাবি জানাচ্ছি। এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, উত্তরবঙ্গের প্রতি সীমাহীন বঞ্চনার বড় উদাহরণ রায়গঞ্জ থেকে কল্যাণীতে এইমস সরিয়ে নিয়ে যাওয়া।
বিজেপি বিধায়কের এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন দার্জিলিং জেলা (সমতল) তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ। তিনি বলেন, দক্ষিণবঙ্গের মতো উত্তরবঙ্গের তাপমাত্রা হয়তো অতটা বেশি নয়। কিন্তু, এই সময় অন্যান্যবার উত্তরবঙ্গে যে তাপমাত্রা দেখা যায় এবার তার থেকে অনেক বেশি। গরমের শুরুতেই এত তাপমাত্রা থাকে না। এখানেও মানুষ গরমে হাঁসফাঁস করছে। আসলে শঙ্করবাবু এসি ঘরে থাকেন, এসি গাড়িতে ঘুরে বেড়ান তাই তিনি তাপমাত্রা কতটা বেড়েছে এবং তা কতটা অসহনীয় তা বুঝতে পারছেন না। সেইজন্যই তিনি এ ধরনের অভিযোগ করে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছেন। রাজ্যের তৃণমূল সরকার উত্তরবঙ্গের প্রতি কোনও বঞ্চনা করে না। এটাই আমাদের রাজনীতি। বিজেপি সব সময়ই বিভেদ, বিচ্ছেদ তৈরি করার জন্য ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তাই শঙ্করবাবুও অবশেষে উত্তরবঙ্গকে ভাগ করার দাবি প্রকাশ্যে আনলেন। মানুষই এর জবাব দেবে।