রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়েই চলছে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে সম্প্রসারণের কাজ

June 24, 2020 | 2 min read

কয়েকদিন আগে পর্যন্তও তাঁদের চরম দুর্দশা ছিল সংবাদ শিরোনামে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে চলেছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও। অবশেষে তাঁদের অনেকেই নিজভূমে ফিরতে পেরেছেন। যাঁরা পারেননি, সংশ্লিষ্ট রাজ্যে তাঁদের কাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ রাজ্যে তেমন শ্রমিকদের নিয়েই শুরু হয়েছে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে সম্প্রসারণের থমকে যাওয়া কাজ। তাঁদের সঙ্গে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শ্রমিকরাও রয়েছে। করোনার আকঙ্ক সরিয়ে রেখে, কোভিড-বিধি মেনেই রাস্তা গড়ার কাজে হাত দিয়েছেন তাঁরা।

কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েকে চার লেনের করার পরিকল্পনা রাজ্য সরকারের রয়েছে। এটি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প। দীর্ঘ টালবাহানার পরে লকডাউনের কিছু দিন আগে থেকেই শুরু হয় কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে সম্প্রসারণের কাজ। কিন্তু তার পরেই লকডাউনে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। লকডাউন শিথিল হতে ফের কাজ শুরু হয়েছে। ভরসা রাখা হয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদের উপরে। যাঁরা বরাতকারী সংস্থার হয়ে রাস্তা তৈরি কিংবা সংশ্লিষ্ট অন্য কাজে নেমেছেন, তাঁদের কেউ ভিন রাজ্যের বাসিন্দা, আবার কেউ এ রাজ্যের বাসিন্দা হলেও তাঁরা ভিন জেলার বাসিন্দা। সংস্থার এক কর্তা বলেন, ‘যেহেতু লকডাউন চলছে, তাই মিলিয়ে মিশিয়েই কাজ করছেন শ্রমিক কর্মচারীরা।’  

কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে

প্রথম পর্যায়ে সোদপুর মুড়াগাছা মোড় থেকে কাঁচরাপাড়া কাঁপামোড় হয়ে কল্যাণীর দিকের কিছুটা অংশে প্রায় ৩০ কিলোমিটার রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাইওয়ে ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন। সেইমতো একটি সংস্থা বরাত নিয়ে কাজ শুরু করেছে। যার আনুমানিক খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১,২৪৯ কোটি টাকা। আগামী আড়াই বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। চার লেনের কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে একেকটি লেন চওড়া হবে ৯ মিটার। মাঝখানে প্রায় ১.২ মিটারের ডিভাইডার থাকবে। এ ছাড়া দু’দিকে সার্ভিস রোড করা হচ্ছে। যেটি চওড়ায় কমপক্ষে সাড়ে পাঁচ মিটার করা হবে। এই দৈর্ঘ্য বাড়তেও পারে। এই সার্ভিস রোড মূলত সাইকেল চালানোর জন্য ব্যবহার করা হবে। কল্যাণীর দিক থেকে দ্রুতগতিতে যাতে গাড়িতে করে কলকাতার দিকে পৌঁছনো যায়, সে কারণে নতুন এই প্রকল্পে ট্র্যাফিক সিগনাল যাতে এড়ানো যায়, তার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ঠিক হয়েছে কাঁপা থেকে মুড়াগাছার মধ্যে ১৭টি পয়েন্টে উড়ালপুল-সহ অন্য পরিকাঠামোর ব্যবস্থা হবে। যার মধ্যে মুড়াগাছা মোড়, ওয়্যারলেস মোড়, পানপুর মোড়, সাহেব কলোনি মোড়, কাঁপা— এই পাঁচটি পয়েন্টে উড়ালপুল বেশ দীর্ঘই হবে।

লকডাউন পুরোপুরি উঠলে কাজের গতি অনেকটা বাড়বে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাইওয়ে ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের এক কর্তা। যে সব সংস্থা রাস্তার কাজ করে, তাদের অভিজ্ঞতার নিরিখে কাজের ক্ষেত্রে পরিযায়ী শ্রমিকদের ভূমিকা রয়েছে। বিশেষ করে বড় বড় রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রে। বরাতপ্রাপ্ত সংস্থার এক কর্তা বলেন, ‘যে কোনও কাজের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা একটা বড় ব্যাপার। ফলে মিলিয়ে-মিশিয়ে কাজ করানো হয়। লকডাউন উঠলে বেশি করে শ্রমিকরা আবার যখন কাজে যোগ দিতে শুরু করবেন, তখন স্বাভাবিক নিয়মেই কাজের গতি বেড়ে যাবে।’ তাঁর কথায়, ‘গত মার্চ থেকে কাজ শুরু হয়ে লকডাউনের জন্য কিছুটা থমকে গিয়েছিল। আবার শুরু হয়েছে কাজ। আড়াই বছরের মধ্যে যাতে কাজ শেষ করা যায়, পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’  

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#migrant workers, #Kalyani Expressway

আরো দেখুন