গেরুয়া শিবিরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের মাঝেই আজ বাংলায় আসছেন অমিত শাহ, কী নিদান দেবেন?
এমনিতেই দুর্বল সংগঠনের পাশাপাশি বাংলায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে জেরবার কেন্দ্রের বিজেপি নেতারা।

বাংলার মানুষের মন বুঝতে পারবেন, এমন কোনও নেতাকে এবার পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্ব দিতে চাইছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এমনিতেই দুর্বল সংগঠনের পাশাপাশি বাংলায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে জেরবার কেন্দ্রের বিজেপি নেতারা। এই অবস্থায় কালবিলম্ব না করে কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে নিয়ে রাজ্য পার্টির একটি বড় অংশের ক্ষোভ সামলাতে মরিয়া হয়েছেন তাঁরা। আজ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দু’দিনের বঙ্গ সফরে তাঁর সঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। অন্দরের খবর, বঙ্গ নেতাদের সঙ্গে অমিত শাহের ওই সাংগঠনিক বৈঠকে রাজ্যে দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক নিয়ে আলোচনার জোরদার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এমনকী এই ব্যাপারে রাজ্য পার্টির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কাছ থেকে মতামতও চাওয়া হবে।
কাগজে-কলমে হলেও এই মুহূর্তে বাংলায় দলের ভারপ্রাপ্ত নেতার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন বিজেপির অন্যতম সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। কিন্তু ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ধরাশায়ী হওয়ার পর কৈলাস বিজয়বর্গীয় আর বাংলা-মুখো হননি। যা নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের একটি বড় অংশের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে। বিজেপি সূত্রের খবর, বিজয়বর্গীয়র এই ভূমিকায় খোদ অমিত শাহও ক্ষুব্ধ। অসন্তুষ্ট বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাও। এই পরিস্থিতিতে বাংলায় দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক পদে পরিবর্তন শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা বলেই গেরুয়া শিবির মনে করছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বঙ্গ সফরে সেই প্রক্রিয়ারই সূচনা হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
যদিও এই ব্যাপারে একাধিকবার বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তার কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। আজ, বৃহস্পতিবার এবং কাল, শুক্রবার দু’দিনের সফরে বাংলায় থাকবেন অমিত শাহ। সরকারি এবং দলীয় দু’ধরনের কর্মসূচিই রয়েছে তাঁর। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত যা খবর, তাতে শাহের সফর চলাকালীনও বাংলায় যাচ্ছেন না বিজয়বর্গীয়। ফলে গোটা বিষয়টি নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই আরও জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। দিনকয়েক আগে অবশ্য দিল্লিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নাড্ডার সঙ্গে দেখা হয়েছে বিজয়বর্গীয়র। রাজ্য বিজেপির অন্যতম সহ-সভাপতি তথা সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, ‘বঙ্গবাসীর মন বোঝা যেমন জরুরি, তেমনই বাংলার সংস্কৃতি সম্পর্কেও পর্যবেক্ষকের সম্যক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। বাংলাকে না জানলে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব সামলানো সম্ভব হবে না। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নিশ্চই সবদিক বিবেচনা করে দেখবেন। আমাদের মতামত চাওয়া হলে আমরাও এই কথাগুলোই বলব।’ সূত্রের খবর, আরেক বাংলাভাষী রাজ্য ত্রিপুরায় দীর্ঘদিন সংগঠনের কাজে যুক্ত ছিলেন, বিজেপির এমন কোনও নেতাকে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে নিয়ে আসা যায় কি না, তা নিয়েও চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে।