চিদাম্বরমকাণ্ডের আফটার-শক, পিএসি-র চেয়ারম্যান পদ কেড়ে অধীরের ডানা ছাঁটছে কংগ্রেস?
পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (PAC) চেয়ারম্যান পদ থেকে অধীরের অপসারণ এখন সময়ের অপেক্ষা। কেন চেয়ারম্যান পদে তাঁকে রাখা হবে জানতে চাইল এআইসিসি (AICC)? অধীরকে সরিয়ে চেয়ারম্যান পদে শশী থারুরের নাম সংসদীয় দলের তরফে প্রস্তাব করা হতে পারে বলে সূত্রের খবর। বুধবার কলকাতা হাই কোর্টে সওয়াল করতে এসে অধীরপন্থী কংগ্রেস আইনজীবীদের হাতে নিগৃহীত হন দলের প্রবীণ নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম।
এক ব্যক্তি এক পদ নীতিতে হাঁটার কথা আগেই ঘোষণা করে কংগ্রেস (Congress)। এই নীতি নিয়ে দলের অন্দরে বিস্তর বিতর্ক হয়। কিন্তু ব্যতিক্রম ছিলেন অধীর চৌধুরী (Adhir Chowdhury)। তিনি একাধারে লোকসভায় কংগ্রেস সংসদীয় দলের নেতা, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও সংসদে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান। কেন তাঁকে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হবে তা নিয়ে আগেও বহুবার প্রশ্ন ওঠে দলের অন্দরে। কিন্তু কোনও কথাতেই কর্ণপাত করেননি সোনিয়া ও রাহুল গান্ধীরা (Rahul Gandhi)। হাইকমান্ডের ব্যাখ্যা ছিল, যাকে সামনে রেখে সংসদের ভিতরে বিজেপি বিরোধী লড়াই চলছে, কোনও গুরুতর কারণ ছাড়া সরিয়ে দিলে সোনিয়া (Sonia Gandhi) ও রাহুলদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে। সিদ্ধান্ত ভুল ছিল বলে মেনে নিতে হবে গান্ধী পরিবারকে। সেজন্যই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে অধীরের অপসারণের বিষয়টি ঝুলে ছিল।
অধীরের মদতেই চিদম্বরমকে (P. Chidambaram) হেনস্তা করা হয়েছিল, নিশ্চিত কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্ব। কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা বিষয়টি নিজেই সোনিয়া ও রাহুলকে জানিয়েছেন। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কাছ থেকে অভিযোগ শোনার পর নড়েচড়ে বসেছে এআইসিসি। চিদম্বরমের হেনস্তার ঘটনার পরেই সংসদীয় দলের নেতাকে পিএসির চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ১৩ মে থেকে রাজস্থানের উদয়পুরে বসবে কংগ্রেসের চিন্তন শিবির। দলের সাংসদদের সঙ্গে আলোচনার পরেই অধীরকে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণের বিষয়ে চিন্তন শিবিরে চূড়ান্ত সিলমোহর দেওয়া হবে বলে এআইসিসি সূত্রে খবর। সেক্ষেত্রে বিকল্প হিসাবে শশী থারুরের নাম প্রস্তাব করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন এক সাংসদ।
সংসদের নিয়ম অনুযায়ী, পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান বিরোধী দলের থেকে নির্বাচিত হন। সাধারণত বিরোধী দলনেতা এই পদে থাকেন। যদি না বিরোধী দলের পক্ষ থেকে অন্য কোনও নাম প্রস্তাব করা হয়। এছাড়াও, নির্বাচিত চেয়ারম্যান দু’বছরের জন্য থাকতে পারেন। দু’ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ফের তিনি অথবা অন্য কেউ চেয়ারম্যান হতেই পারেন। সেক্ষেত্রে বিরোধীদলের সংসদীয় কমিটির সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে।