এবার একশো দিনের আওতায় মাদুর শিল্প, আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী
একশো দিনের প্রকল্পে মাদুর চাষ ও মাদুর বোনার শিল্পকে অন্তর্ভুক্ত করা হল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) এই সিদ্ধান্তে শুধু মেদিনীপুরেরই ৫ লক্ষের বেশি মানুষ উপকৃত হবেন। উপকৃত হবেন রাজ্যের বাকি মাদুরচাষি ও শিল্পীরাও। আগামী ১৭ মে মুখ্যমন্ত্রী মেদিনীপুরে জেলা সফর শুরু করছেন। সেখানেই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণাটি করতে পারেন তিনি।
গ্রামীণ কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্পে মাদুরশিল্পকে তালিকাভুক্ত করার অনুরোধ জানিয়ে প্রথম মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন সবংয়ের বিধায়ক তথা রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন ও ক্রেতা দপ্তরের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার স্ত্রী গীতা ভুঁইয়া। পরে বিধানসভা থেকে রাজ্যসভা, এই ইস্যুতে সর্বত্র সরব হয়েছেন মানস ভুঁইয়া। অবশেষে ভুঁইয়া দম্পতির দাবি পূরণ হল। খুশি মাদুর শিল্পের আঁতুড়ঘর সবং ব্লক-সহ পিংলা, নারায়ণগড় ও ডেবরা ব্লকের শিল্পীরা।
মানসবাবু জানালেন, সবংয়ের মাদুরশিল্প ভুবনবিখ্যাত। এখানে কোনও শিল্প নেই। ৮০ শতাংশ মানুষ মাদুরশিল্পের সঙ্গে যুক্ত। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঐতিহাসিক মানবিক সিদ্ধান্তে মাদুর শিল্প অক্সিজেন পাবে। লক্ষ লক্ষ মানুষের মুখে হাসি ফুটবে। এবার ১০০ দিনের প্রকল্পে অন্যান্য কাজের মতো মাদুর শিল্পের সঙ্গে জড়িত সকলকে জব কার্ড দেওয়া হবে। খুশি মাদুর চাষি ও মাদুর শিল্পীরা।
সবংয়ের মাদুর চাষি অমল কর ও মাদুর শিল্পী বাবুলাল মাইতি বলেন, “আমাদের উপকার হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মানস ভুঁইয়াকে ধন্যবাদ। ওঁদের জন্য মাদুরশিল্প বেঁচে গেল।”
কিছুদিন আগেই জেলাশাসকের পক্ষ থেকে সবংয়ের বিডিও তুহিনশুভ্র মহান্তিকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। মাদুর শিল্পের বিষয়ে তথ্য জানিয়ে চিঠির উত্তর দেন বিডিও। তারপরই সবুজ সংকেত মেলে।
নবান্ন সূত্রের খবর, ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’র কারণে মুখ্যমন্ত্রী নিজের সফরসূচি পিছিয়েছেন। আগামী ১৭ ও ১৮ মে মেদিনীপুর কলেজিয়েট মাঠে মুখ্যমন্ত্রীর সভা। সেখানেই ১০০ দিনের কাজে মাদুরশিল্পের অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারেন তিনি। সবংয়ের ২ লক্ষ ৯০ হাজার মানুষের মধ্যে ২ লক্ষই মাদুর চাষ ও শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। মেদিনীপুরের অন্যান্য ব্লক ধরলে সংখ্যাটা প্রায় ৫ লক্ষের কাছাকাছি। রাজ্যের অন্যত্রও বহু মানুষ মাদুর চাষের সঙ্গে যুক্ত।
মানসবাবু জানিয়েছেন, মাদুরশিল্প দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। দারিদ্রের কারণে বহু মানুষ এই পেশা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। অনেকে আবার মাদুর চাষ করতে গিয়ে সুদখোরের পাল্লায় পড়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে এঁদের সকলের শাপমুক্তি হল।