রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

১০ লাখের অপারেশন বিনামূল্যে বাংলার সরকারি হাসপাতালে, নজির গড়ল পিজি

May 9, 2022 | 2 min read

রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে শুরু হল ‘এন্ডোভাসকুলার অ্যানিউরিজম রিপেয়ার’ (এভার) পদ্ধতি ব্যবহার করে অস্ত্রোপচার। মহাধমনি, ক্যারোটিড ধমনি সহ মানব দেহের গুরুত্বপূর্ণ রক্তবাহী ধমনি বেলুনের মতো অস্বাভাবিক ফুলে গেলে বা অ্যানিউরিজম হলে জীবনমরণ সঙ্কটে পড়েন রোগী। দ্রুত চিকিৎসা শুরু না করলে ধমনি ফেটে শরীরের রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। এই ঘটনা ঘটলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে মৃত্যু হয় সেই রোগীর। এভার পদ্ধতিতে দ্রুত স্টেন্ট পরিয়ে কঠিন অবস্থা থেকে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয়। জীবনদায়ী এই পদ্ধতিতে চিকিৎসার শুরু হয়েছে রাজ্যের এক নম্বর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল পিজির হৃদরোগ বিভাগে। 
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বেসরকারি কেন্দ্রে এভার চিকিৎসার খরচ কম করে আট থেকে দশ লক্ষ টাকা। পিজিতে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই চিকিৎসার সুযোগ পাবেন মানুষ।

পিজির হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ডাঃ শঙ্করচন্দ্র মণ্ডল বলেন, এটি এমনই এক পদ্ধতি, যেখানে সরকারি অর্থসাহায্য জরুরি। পাশাপাশি প্রশিক্ষিত কার্ডিওলজিস্টেরও প্রয়োজন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এভার-এর জন্য মূল্যবান স্টেন্ট বিনামূল্যে মানুষকে দিতে পারছি আমরা। 


হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হৃদরোগ বিভাগে এভার ব্যবহার করে নিয়মিত চিকিৎসা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত এই পদ্ধতির সাহায্যে চন্দ্রনাথ মঠ (৫৬), অবিনাশ মেহর (৩৩), মনমোহন দাস (৬২), হরিদাস বণিক সহ মোট ছ’জনের প্রাণ বাঁচানো হয়েছে। চিকিৎসকরা বলেন, সাধারণভাবে হৃদরোগের ধমনির অসুখে হৃৎপিণ্ড রক্ত সরবরাহকারী প্রধান ও অপ্রধান ধমনিগুলিতে প্লাক জমার কথাই আমরা শুনে থাকি। জলের পাইপে আবর্জনা জমার মতো, ধমনিতে প্লাক জমতে জমতে (অ্যাথারোস্ক্লেরোসিস) যখন রক্তপ্রবাহ কমতে থাকে, তখন রোগী হাঁটতে গেলে অস্বস্তি বোধ করেন।  শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। বুকে চিনচিনে ব্যথা হতে থাকে। অ্যাঞ্জিওপ্ল্যাস্টি বা বাইপাস সার্জারি করে সেই সঙ্কট থেকে রোগীকে বাঁচান চিকিৎসকরা। কিন্তু যখন এই প্লাক দেহের প্রধান ধমনিগুলিকে (অ্যাওর্টা, সাবক্লিভিয়ান, ক্যারোটিড ইত্যাদি) বেলুনের মতো ফুলিয়ে দেয়, তখন মরণবাঁচন সমস্যা তৈরি হয়। 


এভার পদ্ধতিতে মানব দেহের কুঁচকির অংশ দিয়ে ক্যাথেটার ও গাইডওয়্যারের মাধ্যমে রোগগ্রস্ত ধমনি পর্যন্ত পৌঁছে যায় স্টেন্ট। তারপর স্টেন্ট পরিয়ে ফুলে যাওয়া বিপজ্জনক অংশ ঢেকে দেওয়া হয়। জীবন বাঁচে রোগীর। মোটা ব্যাসের ধমনিগুলিকে রক্ষা করতে অ্যাঞ্জিওপ্ল্যাস্টির স্টেন্ট কার্যকরী নয়। তার থেকে অনেক বেশি মোটা এভারের স্টেন্ট। তা দিয়ে মোটা ব্যাসের ধমনিগুলিকে রক্ষা করার কাজ করা হয়। প্রবীন চিকিৎসকদের বক্তব্য, সামান্য অন্যমনস্ক হলে বা প্রশিক্ষণ না থাকলে চিকিৎসা চলাকালীন গাইডওয়্যারের খোঁচা লেগে ফুটো হয়ে যেতে পারে ফুলে যাওয়া ধমনি। নিমেষে নেমে আসতে পারে মৃত্যু। তাই এই পদ্ধতিতে চিকিৎসার সময় অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হয় এবং প্রয়োজন গভীর মনঃসংযোগের।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Ever method, #SSKM, #free treatment, #hospital, #Govt Hospital

আরো দেখুন