রাতারাতি ফসল কেটে গুদামে তোলার প্রয়োজনে উন্নতমানের যন্ত্রপাতি ব্যবহারে গুরুত্ব রাজ্যের
সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় ‘অশনির’ হাত থেকে রেহাই পেয়েছে রাজ্য। তবে এই ঝড় নিয়েও বেশ আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। এ যাত্রায় রক্ষা পেলেও মাঝেমধ্যেই প্রাকৃতিক দূর্যোগের কবলে পড়ছে রাজ্য। তাই রাতারাতি ফসল কেটে গুদামে তোলার প্রয়োজন পড়ছে। এই কথা মাথায় রেখে সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি ব্যবহারের প্রশিক্ষণে জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
কৃষিকাজে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দিতে বেশ কিছু বছর আগে মাটির গাঁথা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করেছিল রাজ্য। এবার আরও বেশি চাষিকে এই প্রশিক্ষণের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রের খবর। বর্ধমানের মাটি তীর্থে এই প্রকল্পের অধীন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কৃষিকাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি বেশ দামি। সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজন প্রশিক্ষিত ব্যক্তি। সেই কারণেই উভয় সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আরও জোরদার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, আমরা খুব দ্রুত এই বিষয়টি নেয়ে বৈঠক করব। ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসেই কৃষকদের সাহায্য করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে কৃষিকাজে প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করেন। এবার সেই প্রকল্পের মাধ্যমে আরও বেশি সংখ্যক চাষির উপকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই আমরা এগচ্ছি।
রাজ্য কৃষিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুধু মাত্র ২০২১-২২ অর্থবর্ষে রাজ্য কৃষিক্ষেত্রে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার নিশ্চিত করতে মোট ৫৪.৭১ কোটি টাকা খরচ করেছে। যার মধ্যে এই কাজের জন্য আর্থিক সহায়তা দিতে খরচ হয়েছে ২১.৬৯ কোটি টাকা। কৃষিকাজের জন্য দরকারি আধুনিক যন্ত্রপাতি চাষিদের সহজলভ্য করার জন্য তৈরি নতুন কাস্টম হায়ারিং সেন্টার খাতে খরচ হয়েছে ৩১.৫৯ কোটি টাকা। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের কৃষিকাজে ব্যবহার হয় এমন ছোট মাপের যন্ত্রপাতি কিনতে খরচ করা হয়েছে বেশ কয়েক কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষে এই খাতে বরাদ্দ কয়েকগুণ বাড়ানো হচ্ছে বলেই জানা গেছে নবান্ন সূত্রে।
কম্বাইনড হারভেস্টার বা ট্রান্সপ্লান্টারের মতো উন্নতমানের যন্ত্রপাতি খুব সহজেই চাষিরা পেয়ে থাকেন রাজ্যের সহায়তায় তৈরি হওয়া এই কাস্টম হায়ারিং সেন্টার থেকে। যশ থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এই উন্নতমানের উপকরণের মাধ্যমেই বাঁচানো হয়েছে বিঘের পর বিঘের ফসল। মাত্র ১৫ মিনিটে কাটা গিয়েছে এক বিঘারও বেশি জমির ধান। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পরেই রাজ্যজুড়ে কাস্টম হায়ারিং সেন্টার তৈরির উদ্যোগ নেন মুখ্যমন্ত্রী। এজন্য সেন্টার পিছু খরচ পড়ে প্রায় আড়াই কোটি টাকা। এই মুহূর্তে রাজ্যে ২০৬০টি এমন সেন্টার রয়েছে।