এই প্রথম কোনও সাধারণ ভারতীয় নাগরিককে ‘সন্ত’ ঘোষণা ভ্যাটিক্যানের, কেন জানেন?
এই প্রথম কোনও সাধারণ ভারতীয় নাগরিককে ‘সন্ত’ (Saint) হিসেবে ঘোষণা করল ভ্যাটিক্যান (Vatican)। অষ্টাদশ শতকে দেবসহায়ম ওরফে লাজারাস খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। বাকি জীবন কাটিয়েছিলেন জাতপাতের বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে। অবশেষে রবিবার পোপ ফ্রান্সিস তাঁকেই ‘সন্ত’ ঘোষণা করলেন।
১৭৪৫ সালে নাত্তালম অর্থাৎ আজকের কন্যাকুমারীতে জন্মগ্রহণ করেন নীলাকান্দন পিল্লাই। ত্রিবাঙ্কুরের মহারাজা মার্তণ্ড বর্মার আদালত ছিল তাঁর প্রথম জীবনের কর্মক্ষেত্র। তবে উচ্চবর্ণের হিন্দু পরিবারে জন্ম নিলেও পরে তিনি ধর্মান্তরিত হন। এক ডাচ নৌসেনা আধিকারিকের প্রভাবেই তিনি ধর্মবদলের অনুপ্রেরণা পান। জানা যায়, এই সময়ই তাঁর নাম বদলে হয় দেবসহায়ম। পরে সেটিও পালটে রাখা হয় লাজারাস। এই সময় থেকেই তিনি জাতপাতের বিরুদ্ধে প্রচারকার্য শুরু করেন। সেই সঙ্গে চলতে থাকে খ্রিস্টধর্মের প্রচারও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁকে খুন করা হয়। মনে করা হয় রাজার হুকুমেই তাঁকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
তামিলনাড়ু বিশপস কাউন্সিল ও ভারতের ক্যাথলিক বিশপদের সম্মেলনের তরফে ২০০৪ সালে দেবসহায়মকে সন্ত ঘোষণার সুপারিশ করা হয়েছিল। এর পিছনে ছিল একটি ‘অলৌকিক’ ঘটনার দাবি। কী সেই ঘটনা? সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক মহিলার দাবি ছিল, তাঁর গর্ভস্থ ভ্রুণ গর্ভেই মারা গিয়েছিল। পেটের মধ্যে তার কোনওরকম নাড়াচাড়া তিনি টের পাচ্ছিলেন না। সেই সময় তিনি দেবসহায়মের কাছে প্রার্থনা করছিলেন। এরপরই তিনি অনুভব করেন, শিশুটি ফের নড়াচড়া শুরু করেছে।
২০১৪ সালে মহিলার ‘অলৌকিক’ অভিজ্ঞতার ঘটনাটিকে স্বীকৃতি দেয় ভ্যাটিক্যান। অবশেষে রবিবার তাঁকে ‘সন্ত’ উপাধি দিলেন পোপ ফ্রান্সিস। এদিন সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় মোট ৯ জনকে সন্ত ঘোষণা করেন পোপ। তাঁদেরই অন্যতম দেবসহায়ম। উল্লেখ্য, প্রথমে ভ্যাটিক্যানের তরফে দেবসহায়মের নাম করার সময় ‘পিল্লাই’ পদবির কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু এর প্রতিবাদ করে বলা হয়, পদবি যুক্ত করে বললে যে উদ্দেশ্য তাঁর নাম বলা হচ্ছে সেটি যথার্থ হয় না। এরপরই পদবি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।