ইউক্রেন যুদ্ধের বোঝা বইতে হচ্ছে উত্তরের চা শিল্পকে, নতুন বাজার ধরতে উদ্যোগ টি বোর্ডের
করোনা পরিস্থিতি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কাঁটায় দেশের বাইরে চা রপ্তানিতে টান পড়েছে। যার রেশ এসে পড়েছে উত্তরবঙ্গের চা শিল্পে। এই অবস্থায় পশ্চিম ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার বাজার ধরতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে টি বোর্ড।
সম্প্রতি, জলপাইগুড়িতে টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার নর্থবেঙ্গল ব্রাঞ্চের একটি অনুষ্ঠানে এসে এমনই জানান টি বোর্ডের ডেপুটি চেয়ারম্যান সৌরভ পাহাড়ি। তিনি বলেন, বোর্ডের তরফে লাগাতার কথা বলা হচ্ছে ওইসব দেশের চা শিল্পপতিদের সঙ্গে। যাতে ফের রপ্তানির ক্ষেত্রে ঘুরে দাঁড়াতে পারে চা শিল্প। তাঁর কথায়, দেশের চা শিল্পের ট্রাডিশনাল বাজার ছিল রাশিয়া, ইরানের মতো দেশগুলি। কিন্তু দু’টি দেশেই এখন সমস্যা চলছে। এর প্রভাব পড়েছে রপ্তানির ক্ষেত্রে। তাই আমরা এখন পশ্চিম ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার বাজার ধরার চেষ্টা করছি। শুধু নতুন বাজার ধরাই নয়, চা শিল্পদ্যোগীদের নিজেদেরও ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে বার্তা দেন তিনি। বলেন, শুধু সরকারের মুখাপেক্ষী না হয়ে চা শিল্পোদ্যোগীদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পথ খুঁজতে হবে। নিজেদের উদ্যম, নিত্য-নতুন কৌশল প্রয়োগ, অভিজ্ঞতাকে ভর করে এগতে হবে। সবসময় সরকারি সাহায্য পেলেই যে সফল হওয়া যায়, এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নিজেদের প্রচেষ্টায় উৎপাদিত চা বিশ্ববাজারে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি বলেন, চা শিল্পোদ্যোগীদের এখনই ভাবনাচিন্তা করার প্রয়োজন যে, কেন কেনিয়া ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশ আমাদের পরে শুরু করেও চা রপ্তানির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারে এগিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, ক্ষুদ্র চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠন কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান স্মল টি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, আন্তর্জাতিক চায়ের বাজারে ওসব দেশের এগিয়ে যাওয়ার কারণ, সে দেশের চায়ের প্রচারের নীতি যথেষ্ট এগিয়ে। এ ব্যাপারে সে দেশের সরকারের বড় ভূমিকা রয়েছে। দেশের বড় চা বাগানগুলি যেভাবে দীর্ঘ বছর সরকারি সহায়তা পেয়েছে, সেই তুলনায় ক্ষুদ্র চা চাষিরা অনেক কম সুবিধা পেয়েছেন। ক্ষুদ্র চাষিরা চা উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য স্থানে রয়েছে। নিজেদের আর্থিক ভিত্তির উপরই তাঁরা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর বক্তব্য, কিছু ক্ষেত্রে সরকারকে তো উদ্যোগী হতে হবে। বিশেষত রপ্তানির ক্ষেত্রে। একইসঙ্গে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারেও চায়ের ঘরোয়া ব্যবহারের ব্যাপারে সরকারি উদ্যোগের প্রয়োজন রয়েছে, বলেন তিনি।