নস্ট্যালজিয়ার বো ব্যারাক
অঞ্জন দত্তের ছবি ‘বো ব্যারাক ফর এভার’ দেখে যদি মনে করেন বো ব্যারাক মানে শুধুই এক উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন তাহলে ভুল করবেন। লাল টুকটুকে ইটের বাড়িগুলি এখনো ব্রিটিশ কোলনিয়ালিজমের সাক্ষী হয়ে রয়েছে। এটাই কলকাতার বিখ্যাত বো ব্যারাক মহল্লা বা অ্যাংলো পাড়া। রসগোল্লার শহরে যেখানে আজও বুক চিতিয়ে রয়ে গেছে ছানার কেক।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে আমেরিকান সেনাদের থাকার জন্যেই তৈরী হয়েছিল এই ব্যারাক। একসময় এই বাড়িগলোকে ভেঙ্গে ফেলার কথাও হয়েছিল। শেষ অবধি ভাঙ্গা হয়নি। মুছে যায়নি ইতিহাস। বাসিন্দাদের থেকে কেউ ভাড়া নেয় না। রক্ষনা বেক্ষনের-ও বালাই নেই। তবু মাথা উঁচিয়ে বেচে আছে বো ব্যারাক। সব মিলিয়ে থাকে প্রায় ১৩২ টি পরিবার। অনেকে বিদেশে থিতু হয়ে গেলেও লোক সংখ্যা কমেনি।
শুধু অ্যাংলো ইন্ডিয়ানই নয়। এ যেনো এক ছোট খাটো ভারতবর্ষ। একদা বাংলার হকি মাঠের চ্যাম্পিয়ন সাসেলি সেভিয়েল, ফ্রেডেরিক রোজারিওদের দেখা মিলত এখানে। এখানে একাধারে যেমন পাবেন গুজরাটি, তামিল, অ্যাংলো। তেমনিই দেখা মিলবে বাঙালি, পাঞ্জাবির।
মা-মেরী যীশুর মূর্তি রোজ টেনে আনে ফটোগ্রাফারদের। আর ভোজন রসিকদের টেনে আনে বিকেলে পাড়ার মেয়েদের তৈরী পর্ক বা ফিশবল সুপ ও ফিশ সুইমাই।
ক্রিসমাসে বুড়োবুড়িদের বল ড্যান্স, বিকেলের পর্করোস্ট, গরমের ছুটিতে হকি ম্যাচ, সন্ধ্যের আড্ডায় ছানার কেক, ওয়াইন। না একটুও ফিকে হয়ে যায়নি বো ব্যারাক্স।এখনো আগের মতোই রঙিন , জ্বল জ্বল করছে।