অকৃতদার নন, অকৃতজ্ঞ! শ্রমিক সম্মেলনের মঞ্চ থেকেই শুভেন্দুকে নিশানা অভিষেকের

একুশের বিধানসভা ভোটের পরে এই প্রথম পূর্ব মেদিনীপুরে সভা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

May 28, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

একুশের বিধানসভা ভোটের পরে এই প্রথম পূর্ব মেদিনীপুরে সভা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমবার রাজ্যের শিল্পতালুক হলদিয়ায় শ্রমিক সমাবেশে যোগ দিলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। শনিবার ২৮মে হলদিয়ার রানীচকে সংহতি ময়দানের মঞ্চ থেকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ও বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন অভিষেক। সেই সঙ্গে দলবদলু ও অনুগামীদের সতর্কও করলেন।

বিজেপির নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করে অভিষেক বলেন,”যার নেতৃত্বে উত্তর কলকাতায় গুণ্ডামি করে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা হল। এই জেলার একসময়ের সর্বেসর্বা, বিজেপির পদলেহন করে, ইডি-সিবিআইয়ের ভয়ে নিজেকে বাঁচাতে দলবদল করল। দিল্লির বুকে মেদিনীপুরকে বিক্রি করল।” রাজ্যের বিরোধী দলনেতার নিজেকে জেলার সর্বেসর্বা ভাবেন বলেও এদিন কটাক্ষ করেন অভিষেক।

নাম না করে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অভিষেক বলেন, “১১ বছর ধরে একটা লোক সব শেষ করে দিয়েছে। তৃণমূলে থেকে শত্রুপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে। আমিই বলেছি, মানুষের টাকা নিয়েছে। নিজে কোটি কোটি টাকা করেছে। টিভির পর্দাতে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে। আর কথায় কথায় বলে আমি অকৃতদার। আরে আপনি অকৃতদার নন, অকৃতজ্ঞ।”

বিজেপি সরকারকে নিশানা করে অভিষেক বলেন, “বিচারব্যবস্থার এক শতাংশ আছে যারা যোগসাজস করে তল্পিবাহকতা করছে। কিছু হলেই সিবিআই দিয়ে দিচ্ছে। তদন্ত বন্ধ করে দিচ্ছে। খুনিকে রক্ষাকবচ দিচ্ছে। আমার পিছনে তো ইডি-সিবিআই লেলিয়ে দিয়েছে। আমার মাথা নিচু করতে পেরেছে? কাঁচকলা করেছে।” ফের সাংযোজন করেন, “আমি ওদের দুজন সাংসদকে আমাদের দলে এনেছি। তাও তো দরজা খুলছি না আমরা। তাহলে তো দলটাই উঠে যাবে।”

এদিন শুভেন্দু ও তার অনুগামীদের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারী সুরে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, “অনুগামী এক্সচেঞ্জ খুলে বসেছিল কেউ কেউ। কর্মসংস্থানে স্থানীয় বাসিন্দাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। বাইরের লোক এসে কম খেটে বেশি বেতন নিয়ে যাবে, তা হতে দেব না। কে বা কারা ১ মে বিজেপির হয়ে কারখানায় বিএমএসের ঝাণ্ডা তুলেছেন, আর পরের দিন তৃণমূলে ঝাঁপ দিয়েছেন, তার তালিকা আমার কাছে আছে। সভায় আসার পথেও আমি ৪-৫ জনকে ‘অনুগামীকে’ চিহ্নিত করেছি। আজ থেকে সবার সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক তৈরি হল। কিন্তু অনেক অনুগামী দলের ক্ষতি করার চেষ্টা করেছিল, তারা এই সভাতেও আছে। দলের বিভীষণদের আমরা চিহ্নিত করছি।”

এরপর দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দেন অভিষেক, সেই সঙ্গে দুর্নীতিপরায়ণ নেতাদেরও সতর্ক করেন তিনি। তাঁর কথায়, যাঁরা প্রথম থেকে তৃণমূল করছেন তাঁরাই টিকিট পাবে। তাঁর সাফ কথা, আগামীদিনে দলবদলুরা টিকিট পাবেন না। মানুষের দাবি নিয়ে নেতারা পথে নামতেও বলেন তিনি। তিনি বলেন, “১১ বছর অপেক্ষা করেছেন। আমি তিন মাস সময় চাইছি। ১০০ দিন সময় দিন, আর একটাও ঠিকাদার থাকবে না। হয় ঠিকাদারি করুন নয় তৃণমূল, দুটো এক সঙ্গে করা হবে না। কোন ঠিকাদার টিকিট পাবেন না। কোন দাদার অনুগামী হয়ে নয়, নেত্রীর প্রতিনিধি হতে হবে। আমিও সৈনিক, আপনিও সৈনিক, নেত্রী মমতা।
শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে পথে নামুন। শ্রমিক সংগঠন করলে খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধি হতে হবে। ১২ ঘণ্টার কাজ করিয়ে আট ঘণ্টার বেতন দেওয়া চলবে না। তেমন হলে মামলা হবে। প্রতি বছর শ্রমিক সম্মেলন হবে। আমি আসব।”

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen